Home / জাতীয় / সীমান্ত বিল বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের নতুন মাত্রা : প্রধানমন্ত্রী
সীমান্ত বিল বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের নতুন মাত্রা : প্রধানমন্ত্রী
ফাইল ছবি

সীমান্ত বিল বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের নতুন মাত্রা : প্রধানমন্ত্রী

বুধবার, ১০ জুন ২০১৫ ০৯:১৭ অপরাহ্ন

নিউজ ডেস্ক, চাঁদপুর টাইমস :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারতের লোকসভায় স্থলসীমান্ত চুক্তি বিল পাস হওয়ায় দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে নতুন মাত্রা লাভ করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ দিনের কূটনৈতিক তৎপরতার ফলেই বিল পাস ও এর সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে বলেনও জানান প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদেও প্রশ্নোত্তর পর্বে এসএম মোস্তফা রশিদীর তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা জানান, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সংশ্লিষ্ট সমস্যাসমূহের গুরুত্ব ও গভীরতা উপলব্ধি করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে দুই দেশের সীমান্ত সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানকল্পে ১৯৭৪ সালের ১৬ মে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। যা স্থল সীমানা চুক্তি ১৯৭৪ (মুজিব-ইন্দিরা) চুক্তি হিসেবে বিবেচিত। একই বছর ২৮ মে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে সংবিধানের তৃতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে চুক্তিটি অনুমোদিত হয় ও আইন পাস হয়।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর আমি ব্যক্তিগতভাবে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করি। চুক্তিটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১০-১১ সালে টেকনিক্যাল পর্যায়ে দু’দেশের মধ্যে কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। এর ভিত্তিতে ২০১১ সালে একটি প্রটোকল প্রণীত হয়। এরপর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এর বাংলাদেশ সফরকালে প্রটোকলটি দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা স্বাক্ষর করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ৭ মে লোকসভা এবং রাজ্য সভায় ১১ মে ভারতের সংবিধান সংশোধন বিল (১০০ তম) সর্বসম্মতভাবে পাস হয়।

স¤প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরে দু’দেশের মধ্যে অনুসমর্থন উপকরণ (Instrument of Ratification) বিনিময় হয়। এরমধ্য দিয়ে দু’দেশের মধ্যে ১৯৭৪ সালের স্থল সীমানা চুক্তি এবং এর প্রোটকলটি কার্যকর করা সম্ভব হলো। ফলে ৬৮ বছর পর এ সমস্যার সমাধান হলো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চুক্তিটি স্বাক্ষর হওয়ার ফলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবস্থিত ভারতীয় ১১১টি ছিটমহলের আয়তন ১৭ হাজার ১৬০ একর এবং জনসংখ্যা ৩৭ হাজার ৩৬৯ জন। পক্ষান্তরে ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থিত বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের আয়তন ৭ হাজার ১১০ একর এবং জনসংখ্যা ১৪ হাজার ৯০ জন। স্বাক্ষরিত প্রটোকল অনুযায়ী যে ছিটমহল যে দেশের অভ্যন্তরে অবস্থিত তা সে দেশেরই অন্তর্ভুক্ত হবে। এর ফলে বাংলাদেশ নীট ১০ হাজার ৫০ একর জমি বেশি পাবে। ছিটমহলে বসবাসকারী জনগণ সংশ্লিষ্ট ছিটমহল স্বাভাবিকভাবে যে দেশে অন্তর্ভুক্ত হবে স্থানান্তরের মাধ্যমে তিনি সে দেশের নাগরিক হবেন, তবে ইচ্ছা করলে তাদের পূর্ববর্তী দেশের নাগরিক হওয়ার সুযোগ থাকবে।

শেখ হাসিনা বলেন, সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরে ৬টি চুক্তি, ৬টি প্রটোকল ও অন্যান্য এবং ১০টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এরফলে বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বর্তমানে নতুন মাত্রা লাভ করেছে। পারস্পরিক সহযোগিতা ও উন্নয়নের নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হয়েছে। দু’দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, সরকারি এবং সাধারণ জনগণ পর্যায়ে যোগাযোগ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপর আগামীতে ভারতের সাথে বাংলাদেশের যে সকল দ্বিপাক্ষিক সমস্যা রয়েছে সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। উভয় দেশের জনগণের মাঝে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো গভীর ও জোরদার হবে।

চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/ এমআরআর/২০১৫

চাঁদপুর টাইমসর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না