Home / খেলাধুলা / দুর্দান্ত জয়ে ওডিআই র‌্যাংকিংয়ে ছয়ে বাংলাদেশ
tiger
ফাইল ছবি

দুর্দান্ত জয়ে ওডিআই র‌্যাংকিংয়ে ছয়ে বাংলাদেশ

বিদেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের মাধ্যমে ওয়ানডে র‌্যাংকিংয়ে ছয়ে উঠে এলো বাংলাদেশ। এর ফলে শ্রীলঙ্কাকে হটিয়ে ইংল্যান্ডের পরই ছয় নম্বরস্থানে জায়গা করলো মাশরাফি বাহিনী। ডাবলিনে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে ৫ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয় পায় টাইগাররা।

২৭১ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৮.২ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে জয় পায় বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ’র ব্যাটে জয়ের হাসি হাসে তামিম-সাকিবরা।

ত্রিদেশীয় সিরিজে টানা দুই জয়ে আসছে ইংল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও আত্মবিশ্বাস বাড়লো বাংলাদেশের। আগের ম্যাচে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছিল টাইগাররা। আগামী ১ জুন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে লড়বে বাংলাদেশ।

এদিন বাংলাদেশের হয়ে ব্যাটিংয়ে ওপেন করতে নামেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। তবে প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে জিতেন প্যাটেলকে মারতে গিয়ে আউট হন সৌম্য।

সৌম্য দ্রুত বিদায় নিলেও দারুণ ব্যাটিং করে যান তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমান। তাদের ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ১৮.৩ ওভারে দলীয় শতক পূর্ণ হয় বাংলাদেশের। ক্যারিয়ারের ৩৬তম অর্ধশতকের দেখা পান তামিম।পরে তামিম-সাব্বির জুটিতেও শত রান আসে।

ব্যক্তিগত ৬৫ রান করে বিদায় নেন ওপেনার তামিম ইকবাল। এ সময় তিনি সাব্বির রহমানের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৩৬ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েছিলেন। ৮০ বলে ছয়টি চার ও একটি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তামিম।

তামিমের বিদায়ের পর খুব দ্রুতই মাঠ ছাড়েন সাব্বির। সমান ৬৫ রান আসে ডানহাতি এ ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকেও। নতুন ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে আউট হন তিনি। ৮৩ বলে নয়টি চারে ৬৫ রান করেন সাব্বির।

জিতেন প্যাটেলের বলে ব্যক্তিগত ১০ রান করে এলবির ফাঁদে পড়েন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ১৯ রান করে ফেরেন সাকিব আল হাসান। হামিশ বেনেটের বলে মিচেল স্যান্টনারকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি।

এর আগে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে আট উইকেট হারিয়ে ২৭০ রান করে নিউজিল্যান্ড। ব্যাটিংয়ে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন ওপেনার টম ল্যাথাম। এছাড়া অর্ধশতক আসে নেইল ব্রুম ও রস টেইলরের ব্যাট থেকে। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট পান মাশরাফি, নাসির ও সাকিব।

দলীয় চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে মোস্তাফিজুর রহমানকে তুলে মারেন লুক রনকি। তবে ব্যাটে ঠিক মতো না লাগায় ক্যাচ সহজেই লুফে নেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু ১৩৩ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে বিপাকে ফেলেন ল্যাথাম ও ব্রুম জুটি।

দলীয় ২৯ তম ওভারের প্রথম বলে বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন নাসির হোসেন। অধিনায়ক মাশরাফির ক্যাচে পরিণত করে নেইল ব্রুমকে ৬৩ রানে ফেরান দীর্ঘ সময় পর দলে ফেরা নাসির। নিজের পরের ওভারে ফের আঘাত হানেন নাসির। এবার তার বলে সরাসরি বোল্ড উইকেটে আটকে থাকা টম ল্যাথাম।

অথচ সেই ল্যাথামকেই ইনিংসের শুরুতে জীবন দিয়েছিলেন নাসির। দলীয় প্রথম ওভারে মাশরাফির করা বলে শূন্য রানে থাকা ল্যাথামের ক্যাচ ছেড়ে দিয়েছিলেন নাসির। ৯২ বলে ৮৪ রান করেন ল্যাথাম।

ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগে কোরে অ্যান্ডারসনকে ফেরান সাকিব আল হাসান। ব্যক্তিগত ২৪ রানে মাহমুউল্লাহ’র ক্যাচে বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যানকে বিদায় করেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার। তিন ওভার পরেই নিজের প্রথম উইকেট দখল করেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। জিমি নিশামকে মাহমুদউল্লাহ’র ক্যাচ বানান তিনি।

পরের ওভারে সাকিবের বল বুঝতেই পারেননি মিচেল স্যান্টনার। শূন্য রানে সরাসরি বোল্ড হন। কম যাননি মাশরাফিও, কলিন মুনরোকে মুশফিকের ক্যাচে পরিণত করে নিজের দ্বিতীয় উইকেট দখল করেন অধিনায়ক। শেষ দিকে ম্যাট হেনরিকে বোল্ড করে নিজের প্রথম উইকেট তুলে নেন রুবেল হোসেন। টেইলর ৬০ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ডাবলিনে বাংলাদেশ সময় ৩টা ৪৫ মিনিটে খেলতে নেমেছে দু’দল।

আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে টানা তিন ম্যাচ জিতে এরই মধ্যে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে ব্ল্যাক ক্যাপসরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম দেখায় ৪ উইকেটের জয় পায় তারা। সে যাই হোক, দু’দলই ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফি (১ জুন শুরু) সামনে রেখে জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করতে চোখ রাখছে।

র্যাংকিং বিবেচনায় এ ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ। জিতলেই শ্রীলঙ্কাকে হটিয়ে ষষ্ঠ স্থানে উঠে আসবে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি অংশ নেওয়াটাও অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাবে (এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের র্যাংকিংয়ে শীর্ষ আটে থাকতে হবে)।

আইরিশদের বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচে আট উইকেটের দাপুটে জয়ে নিউজিল্যান্ড ম্যাচের আগে যোগ হয় বাড়তি আত্মবিশ্বাস। অন্যদিকে, স্বাগতিকদের বড় ব্যবধানে হারিয়েই নিজেদের শেষ ম্যাচে সিরিজ নিশ্চিত করে নেয় কিউইরা। সব মিলিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এক ম্যাচই উপভোগ করবেন দর্শকরা।

বিদেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর চ্যালেঞ্জ জয় করতে চায় টিম বাংলাদেশ। গত বছরের ডিসেম্বরের পর থেকে চারটি ম্যাচেই হার মানতে হয়। আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আসরে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচেও মুখোমুখি হবে দু’দল। তাই এ ম্যাচটি জিততে পারলে নিশ্চিতভাবেই মাশরাফিদের মনোবল বেড়ে যাবে বহুগুণ।

নিউজিল্যান্ডের কয়েকজন আইপিএল তারকা টিমে ফিরেছেন। আইরিশদের বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচে দেখা যায় ম্যাট হেনরি, অ্যাডাম মিলনে ও কোরে অ্যান্ডারসনকে। যেখানে ১৯০ রানের দাপুটে জয়ে সিরিজ নিজেদের করে নেয় কিউইরা।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ একাদশে একটি পরিবর্তন হয়েছে। আগের ম্যাচে অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিন অলরাউন্ডার সাঞ্জামুল ইসলামের জায়গায় নাসির হোসেন সুযোগ পেয়েছেন। গত বছরের অক্টোবরের পর দলে ঢুকলেন এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার।

নিউজ ডেস্ক
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১২ : ১০ এএম, ২৫ মে ২০১৭, বৃহস্পতিবার
এইউ

Leave a Reply