Home / জাতীয় / অর্থনীতি / বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব
প্রতীকী ছবি

বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব

আবারো বাড়ছে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম: সিঙ্গেল চুলা ১১শ’ ডাবল চুলা ১২শ’ টাকা করার প্রস্তাব । বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম আবারো বাড়াচ্ছে সরকার। উৎপাদন ব্যয় কমলেও বিতরণের ব্যয় সমন্বয় করতেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর যুক্তি দেয়া হচ্ছে। অন্যদিতে শিল্পকারখানা, আবাসিক ও সিএনজি-সব খাতেই বাড়ানো হবে গ্যাসের দাম। সিঙ্গেল চুলার দাম বৃদ্ধি করে ১১শ’ টাকা এবং ডাবল চুলার জন্য ১২শ’ টাকা মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে। প্রস্তাবে গড়ে ৮৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বিইআরসি শিগগিরই এ বিষয়ে শুনানি করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
এদিকে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, উৎপাদন খরচ কমলেও বিতরণের ব্যয় সমন্বয় আনতেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত বিদ্যুৎ বিষয়ক মাস্টারপ্ল্যানের আলোচনায় এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। এ ছাড়া আগামী তিন বছরের আগে লোডশেডিং থেকে মুক্তির কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।
নসরুল হামিদ জানান, বিদ্যুতের দাম বাড়ানো নিয়মিত প্রক্রিয়া। জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্তের সঙ্গে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়টি সাংঘর্ষিক নয় বলেও জানান তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ জেনারেশন (উৎপাদন), ট্রান্সমিশন (প্রেরণ) ও ডিস্ট্রিবিউশন (বিতরণ) প্রতিটি ধাপে খরচ হয়। তিনি বলেন, ‘বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ নেওয়া এটাও একটা খরচ। আর তাই এ দুটোর (ট্রান্সমিশন, ডিস্ট্রিবিউশন) কস্ট তো আর কমে নাই। ওই দুইটাতে আমরা লস দিচ্ছি। যার কারণে এখানে ইনভেস্টমেন্ট বাড়ছে। আবার বিতরণ কার্যক্রমের সঙ্গে একটা রিজনেবল কস্ট হওয়া উচিত । আমরা সেদিকে যেতে চাই।
উৎপাদনের সঙ্গে ঘাটতির বড় ধরনের পার্থক্য না থাকলেও ঢাকাসহ সারা দেশে চলছে লোডশেডিং। উৎপাদন বাড়লেও এমন লোডশেডিংয়ের কারণ হিসেবে এবার প্রতিমন্ত্রী দায়ী করলেন অপরিকল্পিত বিতরণ ব্যবস্থাকে। তিনি বলেন, ‘যদি প্ল্যানড ওয়েতে (পরিকল্পনা অনুযায়ী) উৎপাদন বাড়ত, প্ল্যানড ওয়েতে কানেকশন (সংযোগ) দিলে পরে আর এই ব্যবস্থাটা হতো না। একটা ভালো অবস্থায় বলব না যে আমরা যাচ্ছি। আমরা মনে করি, এখনো আমাদের অনেক পরিবর্তন করা দরকার। এটা (লোডশেডিং) কোপ আপ করতে অ্যাট লিস্ট তিন বছর আরো সময় লাগবে। এটা একটা বড় প্রবলেম। ঢাকার বিদ্যুতের তারগুলো পর্যায়ক্রমে মাটির নিচ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলেও আলোচনা সভা থেকে জানানো হয়।
সূত্র জানায়, গত বছর আগস্ট মাসে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছিল। এর পর মাত্র সাত মাসের মাথাতেই এবার ফের গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে সরকার। এবার বাসাবাড়ি, শিল্পকারখানা, সিএনজি-সব খাতেই দাম বাড়ানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশের ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে। গড়ে ৮৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বিইআরসি শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
উল্লেখ্য, মাত্র ৭ মাস আগে, গত বছরের ২৭ আগস্ট সার উৎপাদন ছাড়া বাকী সব খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছিল, যা ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়। তখন গড়ে দাম বাড়ানো হয় ২৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদেই ২০০৯ সালের ১ আগস্ট গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, কোম্পানিগুলোর দেওয়া প্রস্তাব অনুসারে দাম না বাড়লেও কিছু না কিছু বাড়বেই। কোম্পানিগুলোর দেয়া প্রস্তাবে এবার সিঙ্গেল চুলার মাসিক মূল্য ১১০০ টাকা এবং ডাবল চুলার মূল্য ১২০০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, প্রস্তাবে বাসাবাড়িতে একক চুলার মাসিক মূল্য ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১০০ টাকা এবং দ্বিমুখী চুলার মূল্য ৬৫০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া যানবাহনে ব্যবহৃত সিএনজি গ্যাসের দাম ৮৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্যাসের দাম ২ টাকা ৮২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা ৬০ পয়সা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এখানে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে ৬৩ শতাংশ।
শিল্পকারখানায় নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ১৩০ শতাংশ বাড়িয়ে ৮ টাকা ৩৬ পয়সা থেকে ১৯ টাকা ২৬ পয়সা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ৬ টাকা ৭৪ পয়সা থেকে ১০ টাকা ৯৫ পয়সা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের গ্যাস দাম ১১ টাকা ৩৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৯ টাকা ৫০ পয়সা করার কথা বলা হয়েছে।

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৯:৫৫ পি,এম ১০ আগস্ট ২০১৬,বুধবার
ইব্রাহীম জুয়েল

Leave a Reply