Home / সারাদেশ / যেকারণে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মা ও দু’বখাটে মিলে শিশু হাসমিকে সেদিন হত্যা করে
যেকারণে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মা ও দু’বখাটে শিশু হাসমিকে হত্যা করে

যেকারণে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মা ও দু’বখাটে মিলে শিশু হাসমিকে সেদিন হত্যা করে

খুলনা মহানগরীর আড়ংঘাটা থানা এলাকার শিশু হাসমি মিয়া (৯) হত্যা মামলার রায়ে মা’সহ চার আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, নিহত হাসমির মা সোনিয়া আক্তার, তার প্রেমিক মো. নুরুন্নবী, মো. রসুল ও মো. হাফিজুর রহমান। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার আসামি রাব্বি সরদারকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সকালে খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোসাম্মাৎ দিলরুবা সুলতানা এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

২০১৬ সালের ৬ই জুন রাতে বখাটেদের সঙ্গে অনৈতিক কর্মে লিপ্ত থাকা অবস্থায় দেখে ফেলায় নিজের শিশু সন্তান হাসমি মিয়াকে (৯) ধারালো ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে মা। হত্যার পর গুমের উদ্দেশ্যে লাশ সিমেন্টের বস্তায় ভরে খুলনা বাইপাস সড়ক সংলগ্ন সরদার ডাঙ্গা বিলের মধ্যে ফেলে দেয়া হয়।

হত্যাকান্ডের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মা সোনিয়া বেগম আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য দেয়। গতবছরের ১১ জুন বিকালে খুলনা মহানগর হাকিম ফারুক ইকবালের আদালতে এ জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

স্বীকারোক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম খান বলেন, ৬ জুন রাত ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে শিশু হাসমি মিয়ার মা সোনিয়া বেগম বখাটে যুবক নুরুন্নবী (২০) ও রসুলের (২২) সঙ্গে ২ হাজার টাকা চুক্তিতে সরদার ডাঙ্গা বাগানের (বাঁশ ঝাড়) মধ্যে অপকর্মে লিপ্ত হয়।

এ সময় তার শিশু সন্তান হাসমি ঘটনা দেখে ফেলায় তাৎক্ষণিক তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। সে অনুযায়ী মায়ের সামনেই নুুরন্নবী ধারালো ছুরি দিয়ে হাসমিকে জবাই করে। হত্যার পর ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য ওই রাতেই লাশ সিমেন্টের বস্তায় ভরে খুলনা বাইপাস সড়ক সংলগ্ন সরদার ডাঙ্গা বিলের মধ্যে ফেলে দেয়া হয় বলে মা স্বীকার করে।

পরদিন ঘটনাটি সোনিয়া তার প্রেমিক আসাদুজ্জামান আসাদকে জানায়। আসাদ কেসিসি’র ৩নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুস সালামের ভাই। পুলিশ তাকেও গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ জানায়, ২০০৬ সালে মানিকতলার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন খানের মেয়ে সোনিয়ার সাথে মো. হাফিজুর রহমানের বিয়ে হয়। এর ৬ মাস পর হাফিজুর রহমান বিদেশে চলে যায়। স্বামীর অনুপস্থিতিতে সোনিয়ার চলাফেরা উচ্ছৃঙ্খল হতে থাকে। সে বিভিন্ন যুবকদের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। স্বামী হাফিজুর রহমান দেশে আসার পর বিষয়টি জানতে পারে। এর পর হাফিজুর রহমান স্ত্রীকে শোধরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে গত ৬ মাস আগে তাকে তালাক দেন।

এদিকে, তালাকের পরও গত ৬ জুন সোনিয়া তাদের দু’ সন্তান হাসমি ও হাসফি’র মধ্যে বড় ছেলে হাসমিকে স্বামীর কাছ থেকে নিজের কাছে নিয়ে আসে। উদ্দেশ্য ছিল ছেলে হাসমিকে গুম করে স্বামীর কাছ থেকে অর্থ আদায় করা। কিন্তু বিষয়টি অন্যদিকে চলে যায় বলেও সোনিয়া আদালতে স্বীকার করেছে।

হাসমির বাবা মো. হাফিজুর রহমান ওই দিনই বাদী হয়ে মো. নুরুন্নবী, হাফিজুর রহমান, মো. রসুলের সহ অজ্ঞাত ২ থেকে ৩ জনের বিরুদ্ধে অপহরণের পর হত্যা ও লাশ গুমের মামলা দায়ের করেছিলেন।

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ৫: ০০ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ

Leave a Reply