Home / শিল্প-সাহিত্য / প্রেমিকার নিকট খোলা চিঠি
প্রেমিকার নিকট খোলা চিঠি

প্রেমিকার নিকট খোলা চিঠি

ডা: সাকলায়েন রাসেল

প্রিয় নীলিমা,
পত্রের শুরুতে জানাচ্ছি তোমাকে ‘……’ ফুলের শুভেচ্ছা।

কিন্তু শুরুতেই হোঁচট খেয়ে গেলাম! কি ফুলের শুভেচ্ছা জানাব তোমাকে। আমি তো জানিনা কি ফুল পছন্দ তোমার। আচ্ছা যদি বলি গোলাপ ফুলের শুভেচ্ছা রইল, ভাল লাগবে কি তোমার? এখানেও দ্বিধা। গোলাপ ফুল আদৌ পছন্দ কর কি তুমি?
যদিওবা পছন্দ কর তুবুও দ্বিধা ছাড়ছে না। কোন রঙের গোলাপ পছন্দ কর তুমি? বাজারে তো লাল সাদা থেকে শুরু করে হরেক রঙের গোলাপ পাওয়া যায়। তাই গোলাপের শুভেচ্ছাও জানাতে পারলাম না। আচ্ছা যদি বলি ‘ঘাস’ ফুলের শুভেচ্ছা রইল তুমি খুশী হবে তো? ঘাস ফুলের তো গন্ধ নেই। দেখতে ভাল লাগলেও নাকে কোন সুখ দেয় না। তাই ভাবছি একটা ‘গন্ধরাজ’ ফুলের শুভেচ্ছা দিব তোমাকে। এখানেও বিপত্তি। অনেকে আবার তীব্র গন্ধ পছন্দ করে না। আচ্ছা বেলি ফুল দিলে ক্যামন হয়? কিংবা জুঁই, কামেনী, রজনীগন্ধা? ধুর, ঘুরে ফিরে সব ফুল তো সাদা হয়ে যাচ্ছে! তুমি আবার মাইন্ড করবে নাতো? ভাবছ, ফুলেই যখন দিবে তখন একটু রঙ চঙ ওয়ালা ফুল কেন নয়? আচ্ছা নীলিমা, তুমি কি পুকুরে ফুটে থাকা কচুরিপানার ফুলটা দেখেছো কখনো? বেগুনী-নীলের কি অপরূপ সৌন্দর্য, তাই না? যাও তবে ঐ শুন্য স্থানে লিখে দিলাম ‘কচুরিপানা’ ফুলের শুভেচ্ছা রইল। ভাবছি এতে আবার তুমি খিলখিলিয়ে হাসছো নাতো? ভাবছো এতো ফুল থাকতে শেষ পর্যন্ত কচুরিপানা! তবে কি জংলী ফুলের শুভেচ্ছা দিব? এখানেও বিশাল সমস্যা ! কত ধরণের জংলী ফুল আছে ! এর মধ্যে কোনটা যে তোমার পছন্দ ! তবে কি তোমাকে কোন ফুলের শুভেচ্ছা জানাতে পারব না? আমার যে বড় শখ তোমাকে প্রথম পত্রেই তোমার পছন্দের ফুলের শুভেচ্ছা দেই। কি যে করি বলতো। কেন যে কখনো জানা হয় নি কি ফুল পছন্দ তোমার! সরি নীলিমা, তোমার দিগন্ত রেখাটা তোমার পছন্দের ফুলের রঙ্গে রাঙ্গিয়ে দেয়া হলো না।
পেয়েছিইইইইইইইইই! একটা না একটা ফুল তো তুমি পছন্দ করই। তাই শুন্যস্থান পুরণ করে এবার প্রথম বাক্যটা শেষ করার উপায় পেয়ে গেছি আমি !!! দেখতো বাক্যটা নির্ভুল হয়েছি কিনা… ‘পত্রের শুরুতে জানাচ্ছি তোমাকে ফুলেল শুভেচ্ছা’। ব্যাস, এবার খুশী তো…ফুলেল শব্দটা দিলেই তো সব ফুল এর মধ্যে পড়ে যায়, তাই না !! নীলিমা, তুমি কি খেয়াল করেছো… ‘ফুলেল’ শব্দটি দিলে মাত্র এক লাইনে চিঠিটা শেষ করা যেত…অথচ সহজ এ বিষয়টাকে টেনে টেনে কত বড় করে ফেলেছি…
আমি জানি ছোট্ট একটা ব্যর্থতায় অনেক দুঃখ পেয়েছো তুমি…তুমি চাইলে এ পত্রের মত করে টেনে টেনে সে দুঃখটা বড় করতে পার …অথবা শেষ করে দিতে পার এক নিমিষেই। এবার ভাব তুমি কি করবে?
ইতি
…………….

-বসন্তের ফুল সবচেয়ে বেশি গন্ধ ছড়ায়…কিন্তু আপনি চাইলেই সে সৌরভ টেনে নিয়ে যাতে পারেন বছরের প্রতিটা দিনে…বাসন্তী শুভেচ্ছা সবাইকে