Home / সারাদেশ / গাছে ঝুলিয়ে মামা ভাগ্নেকে অকথ্য নির্যাতন
গাছে ঝুলিয়ে মামা ভাগ্নেকে অকথ্য নির্যাতন

গাছে ঝুলিয়ে মামা ভাগ্নেকে অকথ্য নির্যাতন

chandpur times Desk:

ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার কাহালগাঁওয়ে দুই যুবককে চুরির অপবাদে আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হয়েছে। এক পর্যায়ে পায়ের নখ উপড়ে ফেলে তাদের গাছে ঝুলিয়ে দেয়া হয়।

পরে নির্যাতনের প্রতিবাদে ভালুকা-ঘাটাইল সড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার সকালের দিকে চারঘণ্টা অবরোধ করে রাখা হয়। বর্তমানে দু’যুবক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আহতরা হলেন-ভালুকা উপজেলার হাতিবেড় গ্রামের মৃত হাতেম আলী ছেলে দুলাল ও তার ভাগ্নে মনির।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দুলাল তার স্ত্রী শেফালীকে নিয়ে দীর্ঘদিন সৌদি আরবে থাকা অবস্থায় সেখান থেকে জমি কেনার জন্য টাকা পাঠালে তার শ্যালক হামিদ নিজের ও বোনের নামে জমি কেনেন। দুলাল দেশে এসে বিষয়টি জানতে পারলে হামিদের সঙ্গে এ নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।

গত বুধবার বিকেলে দুলাল তার ভাগনে মনিরকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ফুলবাড়িয়া উপজেলার কাহালগাঁও গ্রামে যায়। ওই রাতে তাদের দুজনকে মোটরসাইকেল চুরির মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সারাদিন দুলাল ও মনিরকে গাছে ঝুলিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এনায়েতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির। নির্যাতনের নেতৃত্বে দেয় এলাকার হামিদ, কাইয়ুম, আমিন, শফিউল আলম, রিয়াজ, চানু ও শিশির। নির্যাতনকালে দুলালের বাম পায়ের নখ উপড়ে ফেলে তারা। পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে যায় নির্যাতনকারী যুবকরা।

পরে স্থানীয় লোকজন আহত দুলাল ও তার ভাগনে মনিরকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়।

এদিকে, মামা ভাগনেকে নির্যাতনের প্রতিবাদে ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সকাল ৬টা থেকে ৪ ঘণ্টা ব্যাপী ভালুকা-ঘাটাইল সড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইছাহাক আলী বিচারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় তারা। দীর্ঘক্ষণ সড়ক অবরোধ থাকায় রাস্তার দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

মামলার বাদী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমার ছেলে মনির ও শ্যালক দুলালকে অন্যায়ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। দুলালের শ্যালকের কাছে জমির টাকা ফেরত চাওয়াতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় দশজনকে আসামি করে ফুলবাড়িয়া থানায় ১৩ মার্চ একটি মামলা (নং-০৬) দায়ের করা হয়েছে।

এনায়েতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবীর হোসেন তালুকদার তার উপস্থিতিতে নির্যাতনের কথা আস্বীকার করে বলেন, ‘আমি ওই সময় সেখানে ছিলাম না। মোবাইল ফোনে দু’জন মোটরসাইকেল চোর আটক করা হয়েছে জানালে তাদের আইনে আশ্রয় নিতে বলি।’

ভালুকা উপজেলার ১নং উথুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এছহাক আলী বলেন, ‘গত ৩দিন আগে আমার ইউনিয়নে ২ যুবককে পার্শ্ববর্তী এনায়েতপুর ইউনিয়নে কালাহালগাঁও গ্রামে নিয়ে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে নির্যাতন করা হয়েছে। যুবকরা মোটরসাইকেল তো দূরের কথা তারা সাইকেলও চালাতে পারে না। এটা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ঘটনা।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকারী ফুলবাড়ীয়া এসআই আবুল খায়ের জানান, এ ঘটনায় রিয়াজ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।