Home / উপজেলা সংবাদ / চাঁদপুর সদর / চাঁদপুরে দেড়যুগ আগের নড়বড়ে কাঠের পুলে জীবন ঝুঁকিতে পারাপার
চাঁদপুরে দেড়যুগ আগের নড়বড়ে কাঠের পুলে জীবন ঝুঁকিতে পারাপার

চাঁদপুরে দেড়যুগ আগের নড়বড়ে কাঠের পুলে জীবন ঝুঁকিতে পারাপার

চাঁদপুর সদরের মেঘনা নদীর পাশে ইব্রাহীমপু ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ফতেজংগপুর বাজার সংলগ্ন পুরানো নড়বড়ে কাঠের পুলে চলাচল করছে প্রতিদিন শত শত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জনসাধারণ। দিন দিন এর ওপর দিয়ে চলাচলাকারী বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে বর্তমানের নড়বড়ে ওই কাঠের পুলটি তৎকালীন সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আলম মোল্লা এটি নির্মাণ করেন। এর দু’ তিন বছর পর থেকেই নানা রকম জোড়া-তালি দিয়ে দীর্ঘ ১৯-২০ বছর যাবত পুলটিতে স্থানীয় জনগণ ও শিক্ষার্থীরা‘ চলাচল করছে। পাশেই নতুনভাবে নির্মাণ হচ্ছে ফতেজংগপুর পুলিশ ব্যারাক।

এ ইউনিয়নের সদস্য জানান, ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ নড়বড়ে কাঠের পুলের পরিবর্তে ১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্ধারণ করে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাস কর্।ে ওয়ার্ক আদেশও দেয়া হয়। চাঁদপুর-হাইমচর আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি ১ নভেম্বর ২০১৮ এর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনসহ উদ্বোধন করেন। পরিতাপের বিষয হলো ঠিকাদার কাজ করছে না।

চাঁদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের একজন সিনিয়র প্রকৌশলী বলেন ‘ ঠিকাদারের কাজ বাতিল করার জন্যে ইতোমধ্যেই চিঠি দেয়া হয়েছে। হয় তার কাজের আদেশ বাতিল হবে অথবা জরিমানা আদায় করা হবে ।’

ইব্রাহীমপরু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.আবুল কাসেম খান চাঁদপুর টাইমসকে মোবাইলে রোববার (১০ ফেব্রুয়ারি) তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন ,‘ দেখতেই পারছেন ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন হয়েছে। কিন্ত ঠিকাদার কাজ করছে না। এ ব্যাপারে আপাতত : যতটুকু জানি ঔই ঠিকাদার বাতিল করে নতুন ভাবে হবে। ’

তিনি আরো বলেন ,‘ পুলটি সংস্কারে স্থানীয় অধিবাসীদের এখন প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। আমি পুলটির ব্যাপারে ভীষণ উদ্বিগ্ন। কখন কী ঘটে যায় তা’বলা যায় না। দিন দিন এ পথে সাধারণ মানুষের চলাচল বাড়ছে। কেননা শরিয়তপুর-চাঁদপুর-হরিণা ফেরিঘাট দিয়ে চাঁদপুর ও হাইমচর যাতায়ত করছে। বাজারের দিন সবাই উদ্বিগ্ন থাকে। ’

পুলটির কাছাকাছি বাজারের একটি ফার্মেসির মালিক মো.শাহ আলম দেওয়ান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘এ পর্যন্ত বেশ ক’বার পুলটি রিফিয়ারিং করা হয়েছে। বাজার ব্যবসায়ীরা,সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মো.সফিকুর রহমান ভূঁইয়া, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী’র ব্যক্তিগত অর্থে ক’ ধাপে রিপেয়ারিং করা হয়।

এভাবেই চলে গেলো ২০ বছর। আমাদের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডা’ দীপু মনি এম পি এর উদ্বোধন করার পরও কেন এর কাজ বন্ধ রয়েছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। বর্তমান সাংসদ ডা. দীপু মনি ফতেজংগপুর কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের সময় তড়িৎগতিতে পুলটির সংস্কারের আশ্বাস দিয়ে তাঁর কথা রক্ষা করেছেন।

একজন বযস্ক রিকসা চালক বলেন ,‘২৪ ঘন্টাই এখন এ পথে লোকজন ফেরিঘাটে যাতায়ত করে। মৃধ্যাকান্দির সড়কটি পাকা হয়ে গেছে। লক্কর-ঝক্কর সাঁকো দিয়ে এত মানুষের যাতায়ত যে কোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা হতে পারে। এটির মত পুল বর্তমানে দেশের কোথায়ও আছে কী না তা সন্দেহ আছে।’

প্রসঙ্গত , বাজারের পাশেই রয়েছে ফতেজংগপুর কমিউনিটি ক্লিনিক, ইব্রাহিমপুর ইউপির স্থানীয় চেয়ারম্যানের বাড়ি ও তার এ এলাকার অফিস, বাংলাবাজারে পুলিশ ফাঁড়ি, ফতেজংগপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাপ্তাহিক হাট বার ও দৈন্দদিন চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি ঘাটে শত শত মানুষ এ পুলটির ওপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে । পুলটির নিচে দিয়ে শত শত জেলে নৌকা, ট্রলার ও ইঞ্চিন চালিত নৌকা জোয়ার-ভাটার ব্যবধানে চলছে। পুলটির ওপর দিয়ে চলাচলের সময় পুরো পুলটি কাঁপতে থাকে। সফলে পথচারীদের চলাচলে চাপে যে কোনো মুহূর্তে ভেঙ্গে পড়তে পারে পুলটি।

কৃষিজীবীরা কৃষিপণ্য মাথায় করে বাজারে বিক্রির জন্যে আনতে শতবার দোয়া-দুরুদ পড়তে হচ্ছে। পুলটি বর্তমানে ১৮ মিটার লম্বা,৩ মিটার চওড়া ও ১৮ টি সিমেন্টের খূুঁটি রয়েছে। পুলটির মধ্যখানে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে পেরাগের তালি দেয়া হয়েছে। স্থানীয় যুবকরা ফেসবুকেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা চেষ্টা করেছে।

প্রতিবেদক : আবদুল গনি
১১ ফেব্রুয়ারি , ২০১৯

Leave a Reply