Home / বিশেষ সংবাদ / দেশের যে পরিবারে ছেলে সন্তানরা বাঁচে না
দেশের যে পরিবারে ছেলে সন্তানরা বাঁচে না

দেশের যে পরিবারে ছেলে সন্তানরা বাঁচে না

জন্মের পর কয়েক বছর যেতেই ছেলেদের হাত-পা অকেজো হয়ে যেতে থাকে। একপর্যায়ে তা পুরোপুরি অকেজো হয়ে যায়। আর বয়স ২০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই সেই ছেলেদের মৃত্যু হয়। এমন এক পরিবারের সন্ধান পাওয়া গেছে ঝিনাইদহে। যে পরিবারের কোনো ছেলেসন্তানই বাঁচে না!

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ভেন্নতলা গোপীনাথপুর গ্রামের প্রয়াত মজিবুর রহমানের পরিবারের চিত্র এটি। মজিবুরের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে। কিন্তু জন্মের পর থেকেই দুই ছেলে বাবু ও আবদুলের হাত-পা অবশ হয়ে যেতে থাকে। ধীরে ধীরে তা অকেজো হয়ে পড়ে। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করেও ছেলেদের সেই রোগ নির্ণয় করা যায়নি। ১৫ বছর বয়সেই অজ্ঞাত রোগে মারা যায় দুজন। তবে বেঁচে আছেন তাঁর একমাত্র মেয়ে মঞ্জু বেগম।

প্রায় তিন বছর আগে মজিবুর রহমান মারা গেছেন। তবে তাঁর এই অজ্ঞাত রোগ ছিল না।

এদিকে, মঞ্জু বেগমের সংসারে তিন ছেলে। বাবার মতো মেয়ের পরিবারেরও একই দুরবস্থা। তাঁর বড় ছেলে মনিরুল ইসলাম ১৮ বছর বয়সে মারা গেছে। বেঁচে আছে দুই ছেলে আনারুল ইসলাম (১০) ও সাবিকুল ইসলাম (৮)। তারাও প্রতিবন্ধী হয়ে বিছানাগত।

মঞ্জুর মা সিতা বেগম বলেন, ‘আমার দুই ছেলের বয়স যখন ছয় বছর, তখন থেকেই তাদের দুই পা অবশ হয়ে ল্যাংড়া হয়ে যায়। এরপর ধীরে ধীরে দুই হাত অকেজো হয়ে পড়ে। চিকিৎসা করেও কোনো লাভ হয়নি। ১৫ বছর বয়সেই দুই ছেলে মারা গেছে।’

মেয়ে মঞ্জু বেগম জানান, ভাইদের মতোই তাঁর তিন সন্তানের একই হাল হয়েছে। ছেলে মনিরুল ইসলাম ১৮ বছর পূর্ণ না হতেই মারা গেছে। বাকি দুই ছেলেও প্রতিবন্ধী হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। তাঁর দাবি, তাঁদের বংশে মেয়েসন্তানরা এ রোগে আক্রান্ত হন না। তাঁর দুই মেয়ে রাবিনা খাতুন (১৪) ও সাবিনা খাতুন (৯) সুস্থ আছে। রাবিনা ক্লাস নাইনে ও সাবিনা ক্লাস থ্রিতে পড়ছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার মহিউদ্দীন জানান, ওই পরিবারে কোনো ছেলেসন্তানই বাঁচে না। অজ্ঞাত রোগটির চিকিৎসা করতে গিয়ে পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে গেছে। এখন ভিটেবাড়ি ছাড়া তাঁদের আর কিছুই নেই।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক নাজমুল হুদা বলেন, ‘ছয় মাস আগে আমি মঞ্জু বেগমের দুই ছেলেকে চিকিৎসা দিয়েছি। রোগটি সম্পর্কে আমার সুস্পষ্ট ধারণা নেই। প্রকৃত রোগ নির্ণয়ের জন্য আমি তাদের ঢাকার পিজি হাসপাতালে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) যাওয়ার কথা বলেছিলাম।’

মঞ্জু বেগমের স্বামী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘টাকার অভাবে আমরা ঢাকায় যেতে পারিনি।’ (এনটিভি)

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১: ২০ পিএম, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, রোববার
ডিএইচ

Leave a Reply