Home / আন্তর্জাতিক / তিন বাবা-মা শিশুকে জন্ম দেয়ার বৈধতা দিলো ব্রিটেন
তিন বাবা-মা শিশুকে জন্ম দেয়ার বৈধতা দিলো ব্রিটেন

তিন বাবা-মা শিশুকে জন্ম দেয়ার বৈধতা দিলো ব্রিটেন

‘থ্রি-প্যারেন্ট বেবি’ কথাটির সঙ্গে বেশির ভাগ মানুষই পরচিত নন। একটি শিশু জন্ম নেবে, যারা বাবা-মা থাকবেন তিনজন।

আর এই বিষয়কে প্রথমবারের মতো বৈধতা দিল ব্রিটেন।
মূলত শিশুর স্বাস্থ্যকর ডিএনএ নিশ্চিত করতেই এর বৈধতা দিয়েছে দেশটি। ইউকে ফার্টিলিটি ক্লিনিক রেগুলেটর ‘হিউম্যান ফার্টিলাইজেশন অ্যান্ড এমব্রায়োলজি অথোরিটি (এইচএফইএ)’ এই বিশেষ পদ্ধতি আবিষ্কার করেন।

মায়ের গর্ভের ডিম্বাণুর ত্রুটিপূর্ণ মাইটোকোন্ড্রিয়াল ডিএনএ সরিয়ে অন্য নারীর স্বাস্থ্যকর ডিএনএ প্রবেশ করিয়ে শিশু জন্ম দেওয়া হবে। এতে করে শিশুটি জেনেটিক সমস্যার কারণে নানা ধরনের রোগে ভুগবে না।

এ পদ্ধতিতে শিশুটি দুজন বায়োলজিক্যাল মা পাবে। তবে তার বাবা হবেন একজন। তবে এ পদ্ধতিতে শিশুর অধিকার কোন মায়ের দিকে যাবে সে বিষয়টি আদালতের কাছে চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠতে পারে।

এইচএফইএ পদ্ধতিটিকে বৈধতা প্রদান করেছে। তবে নির্দিষ্ট এবং বিশেষ ক্ষেত্রে এ পদ্ধতির প্রয়োগ ঘটতে পারে বলেই মত দেয় তারা। যখন অন্য কোনো উপায় থাকছে না, তখন এ পদ্ধতির প্রয়োগ ঘটতে পারে। কেবলমাত্র স্বাস্থ্যকর ভ্রুণ পেতেই এর প্রয়োগ ঘটবে।

এইচএফইএ এর চেয়ারম্যান স্যালি চেশায়ার জানান, এই পদ্ধতির বৈধতা জীবন বদলে দিতে পারে শিশুর। একটি পরিবারের জন্যও তা সুবিধাজনক হবে। যে দম্পতির শিশু ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকবে এবং প্রাণঘাতী মাইটোকোন্ড্রিয়াল রোগের সম্ভাবনা রয়েছে, তাদের জন্য এ পদ্ধতি বৈধতা পেতে পারে।

উর্বরতা বিষয়ক ক্লিনিকগুলো এ পদ্ধতির প্রয়োগ ঘটাতে লাইন্সের আবেদন করতে পারবে। তবে ২০১৭ সাল থেকে এর কার্যকারিতা শুরু হতে পারে।

নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটি এ গবেষণাকে এগিয়ে নিয়েছে। এরা একটি লাইসেন্সের জন্য আবেদনও করেছে। ইতিমধ্যে দম্পতিরাও এ পদ্ধতি গ্রহণে ইচ্ছা পোষণ করেছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, খুব সাবধানে দম্পতিদের বাছাই করতে হবে। প্রয়োগের পর দীর্ঘদিন ধরে তাদের ওপর পর্যবেক্ষণ চালাতে হবে।

এ পদ্ধতিতে নিউক্লিয়ার ডিএনএ প্রতিস্থাপন করা হবে। এটি একটা মানুষের বৈশিষ্ট্য গঠন করে। উর্বর ডিম্বাণুতে অনুদানের ডিম্বাণু প্রবেশ করবে। ক্ষতিগ্রস্ত মাইটোকোন্ড্রিয়াল ডিএনএ সরিয়েও ফেলা হতে পারে।

যে শিশুটা ত্রুটিপূর্ণ মাইটোকোন্ড্রিয়াল ডিএনএ নিয়ে জন্মগ্রহণ করবে, তারা পরবর্তী জীবনে অনেক ধরনের রোগে ভুগতে পারে। এমনকি প্রাণঘাতী রোগও দেখা দিতে পারে।

এ ধরনের পদ্ধতিকে বৈধতা প্রদানের ক্ষেত্রে ব্রিটেনই প্রথম। কিন্তু এ পদ্ধতিতে বিশ্বের প্রথম শিশু জন্ম নিয়েছে মেক্সিকোতে। এ বছরেই তার জন্ম হয়। তবে মেক্সিকোতে এই পদ্ধতির বিষয়ে কোনো আইনের প্রয়োগ ঘটেনি। মেক্সিকোতে এটি প্রয়োগ করেন ম্যানহাটান ফার্টিলিটি ক্লিনিক। এটা আমেরিকায় নিষিদ্ধ এক পদ্ধতি। কিন্তু নিউ জার্সিতে কমপক্ষে ১৭টি শিশুর জন্ম ঘটেছে মায়ের ভ্রূণে তৃতীয় কারো ডিম্বাণু প্রয়োগের মাধ্যমে।

সবাই অবশ্য এটি নিয়ে আগ্রহী নন। এ ছাড়া আরো অনেক বিশেষজ্ঞ বিরূপ জেনেটিক পরিবর্তনের কথাও চিন্তা করছেন। পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা কি বয়ে আনে তা চিন্তা করতে চান তারা।

তবে হিউম্যান জেনেটিকস অ্যালার্টের ড. ডেভিড কিং জানান, শিশুদের জন্মের ক্ষেত্রে এই ভয়ানক ও পরীক্ষামূলক পদ্ধতি প্রয়োগের সিদ্ধান্ত শিশুদের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করতে পারে। এর মাধ্যমে নকশাকৃত শিশু জন্মের দ্বার উন্মোচিত করা হচ্ছে। (সূত্র : হাফিংটন পোস্ট)

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৩ : ৫০ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬, শনিবার
ডিএইচ

Leave a Reply