Home / বিশেষ সংবাদ / ঢাবির জাল সার্টিফিকেটে ২৭ বছর ধরে তিনি উপব্যবস্থাপক
ঢাবির জাল সার্টিফিকেটে ২৭ বছর ধরে তিনি উপব্যবস্থাপক
কাজী নাসিমা খানম

ঢাবির জাল সার্টিফিকেটে ২৭ বছর ধরে তিনি উপব্যবস্থাপক

কাজী নাসিমা খানম বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের একজন উপ-ব্যবস্থাপক। গত সাড়ে ২৭ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি করপোরেশনে কর্মরত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ডিউটি ফ্রি শপের ইনচার্জ।

সম্প্রতি উপ-ব্যবস্থাপক থেকে পদোন্নতি পেয়ে ব্যবস্থাপক হওয়ার কথা ছিলো তার। নিয়ম অনুসারে, পদোন্নতির আগে কর্মকর্তার শিক্ষাগত সনদপত্র যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজনীয়তা থাকে। আর সেখানেই বাধে বিপত্তি!

নাসিমা খানম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি নাজিম উদ্দিন কলেজ থেকে ১৯৮৮ সালের বিএ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পাস করেছেন বলে চাকরি নেওয়ার সময় এমন সনদপত্র জমা দিয়েছিলেন। ১৯৮৯ সালের ০৯ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্যের সই করা সনদটি ইস্যু করা হয় বলে উল্লেখ রয়েছে।

সেই সনদপত্রটি সঠিক কিনা যাচাইয়ের জন্য পর্যটন করপোরেশন গত ০৩ অক্টোবর নিয়ম অনুসারে এক হাজার টাকা ফি জমা দিয়ে ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর আবেদন জানায়।

এর পর ০৪ অক্টোবর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস যাচাই-বাছাই শেষে, কাজী নাসিমা খানমের ওই বিএ সনদপত্রের তথ্য সঠিক নয় এবং সনদটি জাল বলে উল্লেখ করে।

সনদপত্রটি জাল উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাঠানো প্রতিবেদন ইতোমধ্যে পর্যটন করপোরেশনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এ বিষয়ে পর্যটন করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (পরিচালক) মওদুদুর রশিদ সফদার বলেন, প্রতিষ্ঠানের যে কেউ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে এবং তা প্রমাণ হলে আমাদের প্রবিধানমালা অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাসিমা খানমের সদনপত্রটি জাল উল্লেখ করে ঢাবির দেওয়া প্রতিবেদন নিয়ে তিনি বলেন, এরপরও আবার পুনঃঅনুসন্ধানের জন্য বলা হবে। তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী বলেন, পর্যটন করপোরেশন কাজী নাসিমা খানমের বিএ সনদপত্র যাচাইয়ের জন্য আবেদন করেছিল। অনুসন্ধানে দেখা যায়, সেটি সঠিক নয়।

এ বিষয়ে কাজী নাসিমা খানমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে হলে তিনি ধরেননি। এছাড়া মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।

কাজী নাসিমা খানম ১৯৬৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর মাদারীপুরে জন্ম নেন। তিনি জেলার কালকিনী উপজেলার গোপালপুরের পুরালী গ্রামের কাজী ফকর উদ্দিন আহমেদের মেয়ে।

১৯৮২ সালে তিনি মাদারীপুরের গোপালপুর হাই স্কুল থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে এসএসসি পাস করেন। এরপর ১৯৮৬ সালে জেলার কালকিনী কলেজ থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে এইচএসসি পাস করেন বলে তার ব্যক্তিগত তথ্য থেকে জানা যায়।

১৯৮৯ সালের ১৫ জানুয়ারি কাজী নাসিমা খানম বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনে উপ-ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর দীর্ঘ সাড়ে ২৭ বছর করপোরেশনের বিভিন্ন অফিসে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

করপোরেশন সূত্র জানায়, চাকরিকালীন একটি অপরাধের দায়ে কাজী নাসিমা খাতুনকে একবার তিরস্কার করা হয়। ২০০২ সালের ১৭ জানুয়ারি হোটেল অবকাশে রুম ম্যানেজার হিসেবে কর্মকালে নিজ কক্ষের টেবিলের ড্রয়ারে ১৬ হাজার ২৩৪ টাকা অরক্ষিত ও নিয়ম বহির্ভূতভাবে সংরক্ষণের জন্য তাকে তিরস্কার করা হয়। (সূত্র- বাংলানিউজ)

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১:০০ পিএম, ২৩ জুলাই ২০১৬, রোববার
ডিএইচ

Leave a Reply