Home / জাতীয় / অর্থনীতি / ডেসটিনি কর্মকর্তাদের জামিন শুনানিতে দুদককে আদালতের নির্দেশনা
Destiniy
Destiniy

ডেসটিনি কর্মকর্তাদের জামিন শুনানিতে দুদককে আদালতের নির্দেশনা

ডেসটিনির এমডি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দেয়া শর্ত সাপেক্ষে জামিনের আদেশের উপর দেয়া উচ্চ আদালতের রায় পূণর্বিবেচনার জন্য দাখিলকৃত আবেদনের উপর শুনানী রোববার ( ১৬ জুলাই) অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুনানীতে অংশ নিয়ে ডেসটিনি’র আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ আদালতকে জানান, ডেসটিনি’র সম্পত্তি জব্দকৃত অবস্থায় ক্রমাগত বেহাত হয়ে যাচ্ছে। আনন্দ-ছন্দ সিমেনা হল, ডেসটিনি নিহাজ স্পিনিং মিল লিমিটেড, হাইটেক ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড, ডেসটিনি প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিমিটেডসহ জমি-জমা, দালান-কোঠা, ফ্ল্যাট-বাড়ি সব বেদখল হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় হয়তো এ সকল সম্পত্তির কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।

ব্যাংক হিসাব বিবরণী আদালতে দাখিল করার বিষয়ে রোকন উদ্দিন মাহমুদ আদালতকে জানান, ব্যাংকের হিসাব বিবরণী চেয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করা হলেও, ব্যাংক আদালতের নির্দেশনা ছাড়া ডেসটিনি কর্তৃপক্ষকে হিসাব বিবরণী সরবরাহে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। শুধু তাই না, এইচএসবিসি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ডেসটিনি’র এ সংক্রান্ত আবেদনই গ্রহণ করেনি।

ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ আদালতে আরো জনান যে, ব্যাংক হিসাব জব্দ থাকায় ডেসটিনি’র কর্মকর্তা-কর্মচারিরা বেতন ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। আইনী প্রক্রিয়া ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক অন্যান্য কার্যক্রমও বন্ধ আছে।

বিনিয়োগকারীদের টাকা পরিশোধের বিষয়ে তিনি বলেন, ডেসটিনি’র এমডি ও চেয়ারম্যানকে জামিনে মুক্তি না দিলে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়টি শুধু কোর্টের আদাশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। তাদের জামিনে মুক্তি দিয়ে, প্রয়োজনে সার্বক্ষণিক পুলিশি পাহারায় রেখে, প্রতিদিন লোকাল থানায় হাজির ও প্রতি সপ্তাহে নিম্ন আদালতে হাজিরা প্রদানের শর্তে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার মাধ্যমে জব্দকৃত সম্পত্তি অবমুক্তকরণ ও ব্যাংক হিসাব খুলে দেয়ার মধ্য দিয়ে গ্রাহকদের পাওনা টাকা পরিশোধসহ আদালতের সকল আদেশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

শুনানীকালে আদালত দুদকের প্রসিকিউশনকে কিছু বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন। নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, (১) আগামী ৩০ জুলাই ২০১৭ এর মধ্যে ডেসটিনি গ্রুপভুক্ত সকল প্রতিষ্ঠান ও পরিচালকদের ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার বর্তমান প্রকৃত অবস্থা আদালতে দাখিল, (২) ডেসটিনি’র জব্দকৃত সকল প্রতিষ্ঠানের সম্পদের পূর্নাঙ্গ প্রতিবেদন আদালতে দাখিল, (৩) ডেসটিনি’র কোথায় কী সম্পদ আছে, কী অবস্থায় আছে তার অবস্থান ও বর্তমান অবস্থা উল্লেখ পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। আদালতের নির্দেশনানুযায়ী পরবর্তী শুনানীর তারিখ ৩০ জুলাই নির্ধারণ করা হবে।

এর আগে আদালত শুনানীর শুরুতে আগের আদেশ মোডিফিকেশনের ব্যাপারে ডেসটিনির আইনজীবীর সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। শুনানী শেষে জামিনে মুক্তির বিষয়ে আদালত কোন মন্তব্য করেননি।

৩০ জুলাই শুনানী শেষে জামিনে মুক্তির বিষয়ে পূণ:আদেশের সম্ভাবনা রয়েছে।

জানা যায়, ২০১৬ সালের ২০ জুলাই ডেসটিনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত দুদকের মানি লন্ডারিং মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীন ও ডেসটিনি-২০০০ লি: এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন হাইকোর্ট থেকে তাদের পাসপোর্ট আদালতে জমার রাখার শর্তে জামিন আদেশ পেয়েছিলেন। কিন্তু জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুদক আপীল করলে তাঁদের মুক্তির বিষয়টি আটকে যায়।

পরবর্তীতে একই বছরের নভেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্টের আপীলেড ডিভিশন নতুন কিছু শর্ত সাপেক্ষে ডেসটিনির শীর্ষব্যক্তিদের জামিনে মুক্তির আদেশ বহাল রাখেন। আদেশে শর্ত দেয়া হয় যে, ছয় সপ্তাহের মধ্যে গাছ বিক্রি করে দুই হাজার আটশত কোটি টাকা দুদকের কাছে জমা দিতে হবে।

কিন্তু শর্ত পূরণ করতে না পারা ও আইনী জটিলতার কারণে বিগত প্রায় এক বছরেও তাঁদের কারামুক্তি ঘটেনি।

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮: ৫০ পিএম, ১৬ জুলাই ২০১৭, রোববার
ডিএইচ

Leave a Reply