Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব উত্তর / টানা বর্ষণে মতলবে ১ হাজার হেক্টর রোপা আউশ পানির নিচে
টানা বর্ষণে মতলবে ১ হাজার হেক্টর রোপা আউশ পানির নিচে

টানা বর্ষণে মতলবে ১ হাজার হেক্টর রোপা আউশ পানির নিচে

চাঁদপুর মতলব উত্তরে দেশের অন্যতম বৃহত্তম মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে এক সপ্তাহের টানা বর্ষণে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির রোপা আউশ পানির নিচে।

সেচ প্রকল্পের ক’টি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, টরকী, ইসলামাবাদ, ইন্দুরিয়া, ফতেপুর, দূর্গাপুর, ব্রাহ্মণচক ও আমুয়াকান্দাসহ ক’টি বিল ঘুরে দেখা গেছে অন্তত ওই ১০টি বিলের রোপা আউশ এখন থৈ থৈ পানির নিচে।

ফলে এ রোপা আউশ মৌসুমে উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

ধানের চারা লাগানো শেষ হয়েছে মাত্র এক মাস আগে। সেচ প্রকল্পের প্রত্যেকটি বিল সবুজ আর সবুজ। কিন্তু টানা ভারী বর্ষণের কারণে বিলগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে কৃষকের আউশ ফসলের স্বপ্ন মাটি হয়ে গেছে। উদ্দমদী ও কালীপুর পাম্প হাউজের ৬ টি পাম্প অনবরত পানি নিষ্কাশন করেও জলাবদ্ধতা রোধ করতে পারছে না। সারাদিন পানি টেনে পানি কিছু কমলেও আবার এক ঘন্টার বৃষ্টিতেই বিলগুলো তলিয়ে যায়।

আমুয়াকান্দা গ্রামের কৃষক খোকন মিয়া ও ইন্দুরিয়া গ্রামের কৃষক আ. আউয়াল’সহ একাধিক কৃষক জানান, আউশ মৌসুমের শুরুতে চাহিদা অনুযায়ী বৃষ্টি হওয়ায় ধান গাছের গঠন ভাল হয়েছে। তবে ক’দিনের বৃষ্টিতে বিলগুলো তলিয়ে যাওয়ায় ধানের ক্ষতি হবে।

এভাবে যদি ৫-৬ দিন ধরে পানির নিচে থাকে তাহলে ধান গাছে পচন ধরার আশংকা থাকবে। এতে গরীব কৃষকরা অপূরণীয় ক্ষতির সম্মূখীণ হবে।

১৯৮৭-৮৮ অর্থ বছরে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প নির্মাণ হওয়ার পর ৩৫ হাজার হেক্টর জমি নিয়ে প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল। বর্তমানে জমি ভরাট,অপরিকল্পিত ঘর-বাড়ি নির্মাণ, ফসলী জমিতে বৃক্ষ রোপন করায় এখন সেচ প্রকল্পের আবাদী জমি এসে দাঁড়িয়েছে ১৫-১৭ হাজার হেক্টরে।

সরকারি খাল,পানি নিষ্কাশনের ক্যানেল,ট্রেইনেতা ক্যানেল,পানি নামার জলাশয়গুলো অবৈধভাবে দখল ও ভরাট হওয়ায় পানি নিষ্কাশনের প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার যে খালগুলো দিয়ে উদ্দমদী ও কালীপুর পাম্প হাউজের দিকে পানি নিষ্কাশন হবে সে খালগুলোতে কচুরিপানা জমাট বাঁধার কারণে দ্রুত গতিতে পানি নিষ্কাশন হতে পারছে না।

অথচ এ খালগুলো কচুরিপানা মুক্ত থাকলে বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গেই পানি নিষ্কাশন হয়ে যেত । এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একেবারেই উদাসীন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়,এ মৌসুমে ৩ হাজার ৬ শ’৭০ হেক্টর জমিতে আউশ চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্রি-২৮, ব্রি-২৭, ব্রি-৪৮,বিআর-২৬,বিআর-১৪’সহ ক’টি উন্নত জাতের ধান।

এ মৌসুমে হেক্টর প্রতি চালের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ দশমিক ৮০ মে.টন।সব মিলে লক্ষ্যমাত্রা ১৩ হাজার ৯শ’৪৬ মে.টন চাল।

মতলব উত্তরের কৃষি কর্মকর্তা মো.সালাউদ্দিন জানান, ‘ প্রবল বর্ষণের ফলে বিলগুলোতে দ্রুত পানি জমে যাচ্ছে। কিন্তু সে অনুযায়ী পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। বিশেষ করে বিভিন্ন খালের মুখ বন্ধ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা যথাযথ না হওয়ায় পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে।

এ ভাবে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হতে থাকলে এবারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত নাও হতে পারে। তবে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের সুইচগেটগুলো অনবরত পানি টানছে।’

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের পানি ব্যবস্থাপনা এসোসিয়েশনের সভাপতি এমএ কুদ্দুস বলেন, ‘উদ্দমদী ও কালীপুর পাম্প হাউজের ৬টি পাম্প রোটেশন অনুযায়ী অনবরত পানি নিষ্কাশন করছে। যতক্ষণ বিদ্যুৎ থাকে ততক্ষণ পাম্পগুলো চলতে থাকে।

দু’টি পাম্প হাউজেরই সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বিলগুলো যেন তলিয়ে না যায় সে জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

প্রতিবেদক : খান মোহাম্মদ কামাল
:আপডেট,বাংলাদেশ সময় ৭: ২৫ পিএম, ২৭ জুলাই ২০১৭,বৃহস্পতিবার
ডিএইচ

Leave a Reply