Home / চাঁদপুর / চাঁদপুর ডিবি পুলিশের পৃথক অভিযানে জেলার বাইরে থেকে আটক ৩
চাঁদপুর ডিবি পুলিশের পৃথক অভিযানে জেলার বাইরে থেকে আটক ৩

চাঁদপুর ডিবি পুলিশের পৃথক অভিযানে জেলার বাইরে থেকে আটক ৩

চাঁদপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পৃথক অভিযানে জেলার বাইরে থেকে নারীসহ ৩ আসামী গ্রেফতার করা হয়েছে।

২১ এপ্রিল গভীর রাতে ঢাকার, ফরিদপুর ও সিরাজগঞ্জ বনবাড়িয়া থানা থেকে তাদের আটক করা হয়।

জেলা গোয়েন্দা অফিস সূত্রে জানা যায়, এসআই মো. আহসানুজ্জামান ও এএসআই রিপন দে’র সংগীয় ফোর্সদের সহায়তায় গত ২১ এপ্রিল গভীর রাত্রে ঢাকার তুরাগ থানা এলাকার পাকুরিয়া নামক স্থানে অভিযান চালায়।

এতে চাঁদপুর মডেল থানার মামলার পলাতক আসামী মো. বিল্লাল হোসেনকে আটক করা হয়।

বিল্লাল ফরিদগঞ্জ উপজেলার উপাদি গ্রামের পিতা- ছালামত মিজির ছেলে।

সে ৭ জানুয়ারি তাফাজ্জল হোসেন কে নানুপুর ওয়াপদা সুইস গেটের সামনের ব্রীজের পূর্ব পাশের্^ ঘাসিপুর রাস্তার মুখে সিএনজি চাপা দিলে তিনি গুরুতর আহত হয়। পরবর্তীতে সিএনজি ধৃত আসামী সিএনজি ড্রাইভার বিল্লাল দুইজন যাত্রীর সহায়তায় ভিকটিম তাফাজ্জল হোসেনকে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের বেডে ফেলে রেখে সু কৌশলে পালিয়ে যায়।

চিকিৎসক জানায় যে, তফাজ্জল হোসেন উক্ত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। এ বিষয়ে সদর থানার এসআই/জাকির হোসেন বাদী হয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার পরপরই মাননীয় অতিঃ পুলিশ সুপার জনাব, মোঃ আশরাফুজ্জামানের নির্দেশে এসআই/ মোঃ আহসানুজ্জামান, জেলা গোয়েন্দা শাখা, চাঁদপুর সদর হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা সহ চাঁদপুর শহরের অনেক গুলো ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে ঘাতক সিএনজি টিকে হাবিবা পরিবহন নামে সনাক্ত করেন। হাবিবা পরিবহন সিএনজিটি ফরিদগঞ্জ থানা এলাকা থেকে আটক করে।

ধৃত বিল্লাল উক্ত হাবিবা পরিবহন সিএনজি ড্রাইভার ছিল বলে সিএনজির মালিক হাবিবুর রহমান নিশ্চিত করেন ।

দুর্ঘটনার পর থেকেই সিএনজি ড্রাইভার বিল্লাল আত্মগোপনে চলে যায়। মামলার তদন্তকারী অফিসার বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিল্লালের অবস্থান চিহ্নিত করে ডিএমপি, ঢাকার তুরাগ থানা এলাকার পাকুরিয়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

এদিকে চাঁদপুর জেলার কথিত ‘ডিসি’ পরিচয় দিয়ে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালক ফরিদগঞ্জের বিশিষ্ট শিল্পপতি এম এ হান্নানের কাছ থেকে চাঁদা আদায়কারী চক্রের নারী সদস্যকে আটক করেছে চাঁদপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

২১ এপ্রিল এসআই মো. আহসানুজ্জামান ও এএসআই রিপন দে সংগীয় ফোর্স নিয়ে ঢাকার তুরাগ থানা এলাকার পাকুরিয়া থেকে মোছা. কুমকুম নেছা(৩৬) কে আটক করে।

মামলার বরাতে গোয়েন্দা পুলিশ জনায়, গত বছরের ১৩ আগস্ট মার্কেন্টাইল ব্যাংক চাঁদপুর শাখার অপারেশন ম্যানেজার ফয়সাল হায়দার চৌধুরী ও ব্যাংকটির পরিচালক শিল্পপতি এমএ হান্নানের মোবাইল ফোনে চাঁদপুর জেলার ডিসি পরিচয় দিয়ে ১৫ই আগস্ট শোক দিবসের অনুষ্ঠান করার জন্য খরচ বাবদ ২ লাখ টাকা দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন।

সেই মোতাবেক ফয়সাল সাহেব ডিসি পরিচয়দানকারী ব্যাক্তি কর্তৃক প্রদত্ত তিনটি বিকাশ মোবাইল নাম্বারে দুই লাখ টাকা প্রদান করেন।

পরবর্তীতে ফয়সাল হায়দার চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সাথে দেখা করে নিশ্চিত হন যে বিষয়টি প্রতারক চক্রের কাজ।
ঘটনার পর থেকেই কথিত ডিসি পরিচয়দানকারীর নিজের মোবাইল নাম্বার এবং প্রদত্ত বিকাশ নাম্বার গুলো বন্ধ করে দেয়।

এ বিষয়ে ফয়সাল বাদী হয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের।
এসআই/মোঃ আহসানুজ্জামান বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সহিত জড়িত ব্যাক্তিদের সনাক্ত করেন এবং সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানা এলাকায় গত ১৯ মার্চ অভিযান পরিচালনা করে আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করেন কিন্তু আসামীরা সুচতুর হওয়ায় সে যাত্রায় সু কৌশলে পালিয়ে রক্ষা পায়।

এরপর পুণরায় বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামীদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে ঢাকার তুরাগ থানা এলাকার পাকুরিয়া থেকে ঘটনার সাথে জড়িত কুমকুম নেছা কে গ্রেফতার করেন।

কুমকুম নেছা ও তার ভাই ইমদাদুল হক সোহেল দুইজন মিলে যোগসাজসে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা হতে প্রায় ৪/৫ কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
সোহেল নিজেকে বিভিন্ন সময় উচ্চ পদস্থ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে বড় বড় ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, সরকারী কর্মকর্তাকে তার প্রতারণার জালে ফাঁসিয়ে লাখ-লাখ টাকা বিভিন্ন বিকাশ নাম্বারে নিয়ে আসতো, আর সে টাকা গুলো উত্তলোন এর জন্য তার বোন কুমকুমকে ব্যবহার করত।

চাঁদপুরের কথিত ডিসি পরিচয়দানকারী মোবাইল নাম্বারটি সোহেলের বোন কুমকুম এর নামে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশন করা।

অপর অভিযানে একই অফিসাররা ঢাকার যাত্রাবাড়ি ফাতেমা হোটেলের পিছনে অভিযান চালায়।

এতে চাঁদপুর সদর মডেল থানার পলাতক আসামী উজ্জল (৩২) আটক করে।

উজ্জল ফরিদপুর জেলার মৃতঃ নুরুল ইসলাম চৌকিদারে পুত্র।

গত ১ ফেব্রুয়ারি গুয়াখোলা রোডের নাজ ভিলার দোতলায় সোলেমান গাজীর বাসায় দুর্ধর্ষ চুরি সংঘটিত হয় এবং চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় রনি নামের এক চোর নগদ ৩৫ হাজার টাকাসহ আটক হয়। আটক রনির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী উজ্জলের তথ্য পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই/ মোঃ আহসানুজ্জামান বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে উজ্জলের অবস্থান চিহ্নিত করতঃ যাত্রাবাড়ি থানার গোবিন্দপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন।

এদেরকে সকলকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮: ১৩ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০১৭, শনিবার
ডিএইচ

Leave a Reply