Home / চাঁদপুর / চাঁদপুর পৌরসভার ৬৭ কোটি ১৬ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা
চাঁদপুর পৌরসভার ৬৭ কোটি ১৬ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা

চাঁদপুর পৌরসভার ৬৭ কোটি ১৬ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা

চাঁদপুর পৌরসভার ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৬৭ কোটি ১৬ লখ ১০ হাজার ৫শ’ ৭৪ টাকার বাজেট সোমবার (২৪ জুলাই) বিকেলে চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে।

বাজেট উপস্থাপন করেন চাঁদপুর পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহম্মদ।

তিনি বলেন, ১১ বছর পার করে ১২তম বাজেট ঘোষণা করার সুযোগ পেয়েছি। সেই জন্য মহান আল্লাহ তা’লার কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। চাঁদপুর পৌরসভা ছোট একটি পৌরসভা ছিল। ২০০৬ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর ২২ কি. মি. উন্নতি করেছি। আগামী দুই এক বছরের সঠিকভাবে কাজ করতে পারলে চাঁদপুর পৌরসভা হবে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন একটি পৌরসভা।

পানি সমস্যার সম্পর্কে মেয়র বলেন, ৩৭টি জেলা শহরের মধ্যে চাঁদপুর একটি। যেখানে ২টি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট হচ্ছে। চাঁদপুর পৌরসভার ভূ-গর্ভস্থ পানি হচ্ছে আর্সেনিক মুক্ত, যুক্ত নয়। তবে পানিতে লৌহ রয়েছে। তা শোধন করতে গিয়ে কিছুটা বিলম্ব হয়। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ২টি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বাস্তবায়ন হলে ভূ-পৃষ্ঠের পানি পৌরবাসীর আগামী ১শ’ বছরের ভোগান্তি দূর করবে।

রাস্তা-ঘাটের সম্পর্কে তিনি বলেন, ট্রাকরোড ও বঙ্গবন্ধু সড়কের অত্যন্ত খারাপ অবস্থা। সেই জন্য পৌরবাসীর কিছুটা দুর্ভোগ হচ্ছে। অধিকাংশ রাস্তার টেন্ডার হয়েছে। বিদ্যুতের পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরির সময় ভারী যানবাহন চলাচলের কারনে ট্রাক রোডের রাস্তাটি বেশী ক্ষতি হয়েছে। রাস্তা-ঘাট আমরা ৫ থেকে ৬ বছর পর পর কারপেটিং করি। তালতলা, নতুনবাজার, মেথারোড, নাজিরপাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় কারপের্টিং করা হয়েছে। এখন বৃষ্টির কারণে রাস্তার কাজ করা যাচ্ছে না। তবে আগামী অক্টোবর মাসে রাস্তাগুলোর কাজ ধরা হবে। ২০১৮ সালের মধ্যে পৌরসভার কোন রাস্তা-ঘাট আর খারাপ থাকবে না। পৌরসভার কোথায়ও আরসিসি ঢালাই নেই। কারণ নতুন নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে। এসবের গ্যাস ও পানির লাইন নির্মাণে রাস্তা খোড়াখুড়ি করতে হয়। আরসিসি ঢালাই হলে মানুষের দুভোর্গ সৃষ্টি হবে। তাই আরসিসি ঢালাই দেওয়া সম্পূর্ন নিষিদ্ধ থাকবে।

শিশু পার্ক সম্পর্কে বলেন, চাঁদপুরবাসীর ভোটানিকাল গার্ডেনের দাবি ছিল। তা চাঁদপুর মেরিন একাডেমি সংলগ্ন ১শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে জানুয়ারি মাসের মধ্যে ভোটানিকাল গার্ডেন ও শিশু পার্ক স্থাপন করা হবে।

যানজট সমস্যায় মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, যানজট নিয়ন্ত্রনে ট্রাফিক পুলিশের অভাব রয়েছে। কিন্তু তারা কাজ করছে। মাঝে মধ্যে পৌরসভার পক্ষ থেকে যানজট নিয়ন্ত্রনে লোক দেওয়া হয়ে থাকে। তবে যততত পাকিংয়ের কারণে শহরে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। যানজট মুক্ত শহর গড়তে পৌরসভা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

ড্রেনেজ সমস্যা সম্পর্কে মেয়র বলেন, চাঁদপুরে তেমন কোনো জলাবদ্ধতা নেই। গত ১১ বছরে আমি শহরে প্রায় ২৬টি আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন নির্মাণ করেছি। তারপরেও কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতার যে সমস্যা রয়েছে তা দ্রুতই সমাধান করা হবে।

পৌরসভার সচিব আবুল কালাম ভূইয়ার পরিচালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।

এছাড়া বিভিন্ন প্রশ্ন রেখে বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শরীফ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জিএম শাহীন, সাবেক সভাপতি ইকরাম চৌধুরী, কাজী শাহাদাত, গোলাম কিবরিয়া জীবন, শহীদ পাটওয়ারী, বিএম হান্নান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মিলন, রহিম বাদশা, সোহেল রুশদী, এটিএন বাংলা ও নিউজের জেলা প্রতিনিধি প¦ার্থনাথ চক্রবর্তী, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশর জেলা প্রতিনিধি শওকত আলী, দেশ টিভির জেলা প্রতিনিধি লক্ষন চন্দ্র সূত্রধর, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি আব্দুল আউয়াল রুবেল, ৭১ টিভির জেলা প্রতিনিধি কাদের পলাশ, মতলবের আলোর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কে এম মাসুদ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এইচএম শামসুদ্দোহা, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মুসফিকুর রহমান, প্যানেল মেয়র ছিদ্দিকুর রহমান ঢালী, শাহনাজ রহমান, হুমায়ুন কবির খান, সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর লায়লা হাসান চৌধুরী, ফরিদা ইলিয়াস, শাহনাজ আলমগীর, আয়শা রহমান, কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী মাঝি, আ. লতিফ গাজী, মামুনুর রহমান দোলন, আলমগীর খান, শাহআলম বেপারী, নাছির চৌকদার, বিল্লাল হোসেন মাঝি, দেওয়ান মো. শাহজাহান, মাঈনুল ইসলাম পাটওয়ারী, হাবিবুর রহমান দর্জি, আলমগীর গাজী, খান বাহাদুর, মালেক বেপারী, চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আল ইমরান শোভন, সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌস, জেলা ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এমএ লতিফসহ শহরের বিশিষ্টজন, সাংবাদিক, পৌর কাউন্সিলার, কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ বিপুল সংখ্যক সুধিজন উপস্থিত ছিলেন।

বাজেটে সরকার প্রদত্ত সহায়তা, বিভিন্ন উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ, জলবায়ু পরিবর্তন তহবিলসহ অন্যান্য খাতে আয় ধরা হয়েছে ৬৭ কোটি ১৬ লক্ষ ১০ হাজার ৫ শ ৭৪ টাকা।

একই সাথে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ, সড়ক মেরামত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যয়সহ অন্যান্য উন্নয়নে সমপরিমাণ অর্থ ব্যয় ধরা হয়েছে। এই বাজেটে পৌরসভার নিজস্ব খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে ২৮ কোটি ৪৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩শ’ ২৮ টাকা।

প্রতিবেদক : মাজহারুল ইসলমা অানিক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০ : ৫৩ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৭, সোমবার
এইউ

Leave a Reply