Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে এ বছরও ২ লাখ মে.টন আলু সংরক্ষণের বাহিরে থাকছে
চাঁদপুরে এ বছরও ২ লাখ মে.টন আলু সংরক্ষণের বাহিরে থাকছে

চাঁদপুরে এ বছরও ২ লাখ মে.টন আলু সংরক্ষণের বাহিরে থাকছে

চাঁদপুর দেশের আলু উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি। আলু উৎপাদনে মুন্সিগঞ্জের পরই চাঁদপুরের স্থান। এ বছরও জেলায় সংরক্ষণের অভাবে উৎপন্ন হওয়া ২ লাখ মে.টন আলু বাহিরে থাকছে।

চাঁদপুরের ৮ উপজেলার মধ্যে ৫ উপজেলায় কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে ১২ টি। সবগুলোর ধারণ ক্ষমতা ৫৪ হাজার মে.টন।

তাই অন্তত ২ লাখ মে.টন আলুর সংরক্ষণের বাহিরে থেকে যাবে। ওইসব আলু চাষীদের পরিচর্যায় ঘরের মাচায় বা মেঝে কৃত্রিমভাবে সংরক্ষণ করে রাখার উদ্যোগ নিতে হবে।

চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ খামার বাড়ি সূত্র মতে, চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে এবার আলু চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল ২ লাখ ৪৩ হাজার ৭শ’৬০ মে.টন। এতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১২ হাজার ১শ’ ৮৮ মে.টন ।

এবার চাষাবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ২ শ’ ৯০ হেক্টর । মৌসুমী বায়ূর প্রভাবে অনবরত ২-৩ দফায় প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়ায় ৪ শ’৮৮ হেক্টর জমির উৎপাদিত প্রায় ৯ হাজার ৭শ মে.টন আলু ক্ষতিগ্রস্থ হয়েও ১২ হাজার ১শ’৮৮ হেক্টর জমিতে এবার উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার মে.টন।

চাঁদপুরের আলু চাষিরা বিভিন্ন জাতের আলু চাষাবাদ করে থাকে। কম-বেশি সব উপজেলাই আলুর ফলন ও চাষাবাদ হয়ে। বিগত ক’বছর ধরেই চাঁদপুরে ব্যাপক আলু উৎপাদন হচ্ছে ।

চাঁদপুর খামার বাড়ির উপজেলা ভিত্তিক তথ্যানুযায়ী , চাঁদপুর সদরে ৪ টি কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। সরকারি বিএডিসি কোল্ড স্টোজের আলু সংরক্ষণের ধারণক্ষমতা ৮ শ’ মে.টন, পাটোয়ারী কোল্ড স্টেরোজের ধারণক্ষমতা ১১ হাজার ৩ শ ’৫০ মে.টন, বাবুরহাটে বিসিকে মনোহরখাদী কোল্ড স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ৮ হাজার মে.টন, চাঁদপুর আইস এন্ড কোল্ড স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ১ হাজার ৫ শ’ মে.টন, আইজি ইস্টার্ণ কোল্ড স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ১ হাজার ১শ’মে টন, পূবালী কোল্ড স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ৫ হাজার মে.টন, এ্যাপোলো কোল্ড স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ১০ হাজার ১শ’ মে.টন ।

মতলবের করিম কোল্ড স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ১ হাজার ৫ শ’মে.টন, মমতা আইস এন্ড কোল্ড স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ২ হাজার ৫ শ’ মে.টন, মার্শাল আইস এন্ড কোল্ড স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ২ হাজার মে.টন, হাজীগঞ্জের মন্নান কোল্ড স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ৫ হাজার মে.টন এবং কচুয়ার গোলবাহার কোল্ড স্টোরেজের ধারণক্ষমতা ৪ হাজার মে.টন।

প্রসঙ্গত, আলু আমাদের দেশের প্রধান সবজি। চাঁদপুরে এর ফল বেশি। নদী বিধৌত ,আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ , আলু পরিবহনে সুবিধা, কৃষকদের আলু চাষে আগ্রহ, কৃষি বিভাগের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রযুক্তি প্রদান, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত,কৃষিউপকরণ পেতে সহজলভ্যতা, বীজ ,সার ও কীটন্শাক ব্যবহারে কৃষিবিদদের পরামর্শ , ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে কৃষিঋণ প্রদান ইত্যাদি কারণে চাঁদপুরের আলুচাষীরা আলু চাষে অধিক আগ্রহী বলে জানা যায়।

এদিকে সারা বছরই সবজি হিসেবে আলুর বেশ চাহিদা রয়েছে। সকল বয়সের মানুষ আলু খেতে পছন্দ করে ।চিকিৎসকগণ ডায়াবেটিক রোগীদের পরিমাণ মত আলু খেতে পরামর্শ দেন। সবজি ছাড়াও আলু দিয়ে প্রায় ১ শ’প্রকারের মুখরোচক খাবার তৈরি করা যায় বলে কৃষিবিদগণ দাবি করেন।

গৃহিণীরাও আলুর তৈরি বিভিন্ন প্রকার খাবার বানাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সব বয়সীরা আলুর তৈরি খাবার পছন্দ করেন। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা দুপুরে গেইটে আলুর তেরি খাবার খেতে তারা খুবই অভ্যস্ত।

আমদের দেশের বেশিরভাগ হোটেল, রেস্তোরাঁ ও বিভিন্ন খাবারের দোকানে আলুর রকমারী খাবার তৈরি করে রসনা বিলাসদের তৃপ্তি প্রদান করে থাকে। বড় বড় সামাজিক অনুষ্ঠানে খাবারের ম্যানুর সাথে আলু থাকছেই।

চাঁদপুরের ক্ষুদ্র ও মাঝারী চাষী ও ব্যবসায়ীদেরও এবারও পোয়াবারো । বর্তমানে ১২-১৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচেছ। আসন্ন রমজান মাসে আলুর মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ খামারবাড়ির একজন কর্মকর্তা চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘কৃষিবিদরা আলু সংরক্ষণের জন্যে চাষীদেরকে সব ধরণের পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। তবে চাঁদপুরে বেসরকারি উদ্যোক্তারা কোল্ডস্টোরেজ নির্মাণ করলে লোকসান হবে বলে মনে হয় না।’

প্রতিবেদক : আবদুল গনি
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৯: ৫০ পিএম, ২৮ মার্চ ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ

Leave a Reply