Home / চাঁদপুর / দীর্ঘ এক যুগেও হয়নি চাঁদপুর জেলা আ’লীগের কাউন্সিল
Awami Ligue Logo-2

দীর্ঘ এক যুগেও হয়নি চাঁদপুর জেলা আ’লীগের কাউন্সিল

দীর্ঘ এক যুগ পার হয়ে গেলেও চাঁদপুর জেলা আ’লীগের জেলা কাউন্সিল (সম্মেলন) হচ্ছে না। গত ২ বছর ধরে ক্ষমতাসীন এ দলটির ‘কাউন্সিল হচ্ছে’ চাউর হয়ে আসছে। এ নিয়ে দলটির জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কাউন্সিলের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন জানালেও তা করছেন না। দলীয় কোন্দল ও অভ্যন্তরীণ বিভেদ নিয়ন্ত্রণ রাখতেই শীর্ষ নেতারা কাউন্সিলের প্রতি আগ্রহী নন বলে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা দাবি করে আসছে।

এদিকে চাঁদপুরে ৩ বছরের জন্য ২০০৫ সালে ২৬ এপ্রিল জেলা আ’লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল। কাউন্সিলে ভোটের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল। তবে সভাপতি পদে ভোটের গড়মিল হওয়ায় ফলাফল স্থগিত রাখেন নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্টরা। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আ’লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী। উদ্বোধন করেন আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আমির হোসেন আমু। প্রধান বক্তা ছিলেন তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মরহুম আবদুল জলিল। পরে কেন্দ্র থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করলে সভাপতি মনোনীত হন ড. শামছুল হক ভূঁইয়া।

এরপর থেকে জেলা আ’লীগ ড. শামছুল হক ভূঁইয়া ও আবু নঈম পাটওয়ারী দুলালের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়ে আসছে। নেতা-কর্মী-সমর্থকরা তাদের অনুগত হওয়ায় ২০০৯ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটি জেলার ৪টি আসনে জয়লাভ করে সরাসরি ক্ষমতার স্বাধ লাভ করে। ফলে আলোচনায় চলে আসেন দলটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তবে চাঁদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ডা. দীপু মনি কেন্দ্রিয় নেতা হওয়ায় স্থানীয় এ দু’নেতার সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকায় দলটিতে গ্রুপিংয়ের সূত্রপাত হয়।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির আগে জেলা আ’লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ইউনিট কমিটি নিয়ে মাঠপর্যায়ে নেতাকর্মীরা ব্যস্ত সময় পার করলেও দলীয় বিভেদের কারণে শেষপর্যন্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। ৫ জানুয়ারি বিনা ভোটে জেলার ৫টি আসনে আ’লীগ পুনঃরায় জয়লাভ ও টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা লাভ করায় ফের জেলা সম্মেলন পিছিয়ে যায়।

বিনা ভোটে জেলা সভাপতি ড. শামছুল হক ভূঁইয়া সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর দলটির মাঠ পর্যায়ে চাউর হয় এবার জেলা সম্মেলন হলে দলের নেতৃত্বে নতুন মূখ আসবে। তবে কবে, কখন দলটির জেলা সম্মেলন হবে- এ নিয়ে মাঠ পর্যায়ে নেতাকর্মীরা অন্ধকারে থেকে যায়।

তবে দলটির শীর্ষ নেতারা বলে আসছে চলতি বছর বিএনপি সমর্থিত ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনের নামে জনবিরোধী ধ্বংসাত্মক কর্মকা- ‘জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচি’র কারণে সম্মেলন পিছিয়ে যায়। তবে এ বছরই ঈদের (রমজান-কোরবানী) পরপর জেলা সম্মেলন হবে বলে দলটির সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটোয়ারী দুলাল সংবাদকর্মীদের বলে আসলেও অজ্ঞাত কারণে সম্মেলন হচ্ছে না বলে জানা গেছে।

কবে নাগাদ জেলা আ’লীগের সম্মেলন হচ্ছে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা জানান, সম্ভাব্য পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফের সম্মেলন পিছিয়ে যাবে। ফলে আগামি বছরের মাঝামাঝি সময় সম্মেলন হতে পারে বলে তারা জানান।

আরেকটি সূত্র জানায়, একাধিকবার কেন্দ্রীয় আ’লীগ জেলা সম্মেলনের জন্য তাগিদ দিলেও জেলা নেতৃবৃন্দ তা কার্যকর করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের শোকজ করা হতে পারে। তবে এ বিষয়ে শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অপরদিকে তৃণমূল নেতাকর্মীরা বলছে, নেতৃত্বের পরিবর্তনের আশঙ্কায় জেলা নেতৃবৃন্দ জেলা সম্মেলনে আগ্রহ প্রকাশ করছে না। তবে তরুণ নেতাকর্মীরা জানায়, যুগ পেরিয়ে গেলেও সম্মেলন না হওয়ায় নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হচ্ছে না।

আরেকটি প্রতিবেদন -“একক নেতৃত্ব আর মামলায় বিধ্বস্ত চাঁদপুর জেলা বিএনপি” পড়তে ক্লিক/টাচ করুন

।। আপডেট ১১:৪৭ পিএম, ১৬ অক্টোবর, ২০১৫ শুক্রবার

প্রতিনিধি/ডিএইচ

রেজাউল করিম