Home / জাতীয় / গ্রাম ও শহরে সমহারে বিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্যোগ
Power Plant Chandpur
ফাইল ছবি

গ্রাম ও শহরে সমহারে বিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্যোগ

শহর ও গ্রামের গ্রাহকদের মধ্যে বিদ্যুৎ বণ্টন নিয়ে যে বৈষম্য চলছে, তা নিরসন করতে চায় বিদ্যুৎ বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় শহর ও গ্রামে যৌক্তিক হারে বিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহে প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

অন্যদিকে গ্রামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। বৈষম্যমূলক এ বিষয় নিয়ে ক্ষুব্ধ গ্রামের মানুষ। ফলে বিদ্যুৎ বিভাগ উদ্যোগ নিয়েছে গ্রাম ও শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ যৌক্তিক হারে নির্ধারণের।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে সারা দেশে যৌক্তিক হারে লোড বণ্টনের নির্দেশ দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে শুধু শহরকে প্রাধান্য না দিয়ে গ্রামেও বিদ্যুৎ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত শনিবার (২৮ মে) রামপুরাস্থ ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টারে (এনএলডিসি) একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কর্মকর্তাদের বিদ্যুৎ বণ্টনের ক্ষেত্রে এ নির্দেশ মেনে চলার কথা বলা হয়েছে।

বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমেদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে বৈঠকে পিডিবি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ হোসেন, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন, আরইবি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন, ডেসকো, ডিপিডিসি, ওজোপাডিকো এবং নর্থ ওয়েস্ট জোন বিতরণ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে গ্রাম ও শহরের বিদ্যুৎপ্রাপ্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এতে গ্রামের মানুষের বিদ্যুৎপ্রাপ্তির বঞ্চনা ও ক্ষোভের বিষয়টি উঠে আসে।

সেখানে বলা হয়, বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হলে শুধু শহুরে মানুষ সুবিধা ভোগ করে, গ্রামের মানুষ লোডশেডিংয়ের মধ্যেই থাকে। এমন পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে হবে। শহর ও গ্রামকে আনুপাতিক হারে বিদ্যুৎ দিতে হবে। যদিও সরকারের আগের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল প্রথমে রাজধানীর সঙ্গে অন্য মেট্রোপলিটন এলাকা, এর পর ক্রমান্বয়ে জেলা, উপজেলা ও গ্রামে লোড বণ্টন হবে। এ কারণেই গ্রামের প্রান্তিক গ্রাহকরা বিদ্যুৎ সুবিধা কম পেত।

রোজার আগের দিন অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে পবিত্র মাহে রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রমজানে সাহরি, ইফতার ও তারাবিহর নামাজে বিদ্যুতের লোডশেডিং না করতে বিতরণ কোম্পানিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ সময়গুলোতে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে সব প্রতিষ্ঠানকে, সেগুলো যেন বিদ্যুৎ ব্যবহার না করে, সে জন্য কঠোর নজরদারি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সরল হিসাবে রমজানে গরম না কমলে লোডশেডিংয়ের কারণে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

চাহিদা ও উৎপাদন বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রমজানে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলেও অন্তত দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লোডশেডিং করতে হবে। তবে বৃষ্টি হলে বা কোনো কারণে তাপমাত্রা কমলে বিদ্যুতের চাহিদা কমবে। কাজেই লোডশেডিংয়ের মাত্রা কমতে পারে।

গত বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, চলতি রমজানে আমাদের বিদ্যুৎ চাহিদা প্রায় ১১ হাজার মেগাওয়াট। গড়ে দেড় হাজার থেকে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লোড শেয়ারিং বা লোডশেডিং করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে।

রমজানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পেট্রোবাংলার কাছে দৈনিক এক হাজার দুশ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা দেয় পিডিবি।

কিন্তু এ পর্যন্ত পেট্রোবাংলা এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ করতে পেরেছে।

পেট্রোবাংলা বলছে, পিডিবির চাহিদার পুরোটা গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব নয়। সঙ্গত কারণেই রমজানেও গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পুরোমাত্রায় চালানো যাবে না।

নিউজ ডেস্ক
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১২ : ৫৫ এএম, ২৯ মে ২০১৭, সোমবার
ডিএইচ

Leave a Reply