Home / লাইফস্টাইল / গায়ের রঙ ফর্সা করার কার্যকরী কিছু কৌশল
nari
ফাইল ছবি

গায়ের রঙ ফর্সা করার কার্যকরী কিছু কৌশল

আমাদের দেশে মানুষের জীবন যাত্রায় চামড়ার রং খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। গায়ের রং ফর্সা না কালো তা দিয়ে লোক বিচার করার নজিরও কম নয়। তাই ফর্সা নন, এমন লোকেদের অনেকেই সবসময়ই গায়ের রং নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না।

সেই চিন্তা থেকে হিনম্মন্যতা আসে যা মানসিকভাবে তাদের পিছিয়ে দেয়।আমরা সকলেই জানি, গায়ের রং কি হবে তা নির্ধারণ করার ক্ষমতা আমাদের নেই। সেটা জন্মের সময়ই ঠিক হয়ে যায় এবং তা জিনগত ব্যাপার।কিন্তু এরপরও মানুষের ফর্সা হওয়ার প্রতিযোগিতার শেষ নেই।

অনেকেই ফর্সা হতে নামদামী কসমেটিকসও ব্যবহার করে থাকেন।এখনকার দিনে সুন্দর দেখতে লাগা যেহেতু খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাই সকলেই চায় নিজেকে সুন্দর করে তুলতে।

তাতে আত্মবিশ্বাসও অনেকটাই বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন মানসিক বিশেষজ্ঞরা সেজন্য কয়েকটি ঘরোয়া উপকরণ নিয়ে চামড়ার রং উজ্বল দিকটি তুলে ধরা হলো। এর মাধ্যমে আগের চেয়ে অনেকটা ফরসা হয়ে উঠবে।

দুধ:

দুধ হলো আল্লাহর এক বিরাট নিয়ামত। আর দুধ গোসল ত্বককে ফর্সা হতে সবচেয়ে তাড়াতাড়ি সাহায্য করে। এ দিয়ে গোসল করলে আলাদা করে সাবান বা শ্যাম্পুর প্রয়োজন হয় না, ত্বকও ফর্সা হয়ে ওঠে।

ডাবের পানি:

ডাব বা নারকেলের জল ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী। ত্বকের উজ্বলতা ফেরাতে, কালো ছোপ দূর করতে এর জুড়ি নেই।

লেবু:

ত্বকের রং ফেরাতে লেবু সবসময়ই ব্যবহার করা হয়। লেবুর সঙ্গে মধু মিশিয়ে চামড়ায় লাগান। এটি স্বাভাবিক ব্লিচের কাজ করবে ও ত্বকের জেল্লা বাড়াবে।

গোলাপ জল:

গোলাপ জল মিশিয়ে গোসল করুন। তাতে অনেকটা লেবুর রসও মিশিয়ে দিন। লেবু ব্লিচের কাজ করবে ও গোলাপ জল গোসলের পরে জেল্লা ফিরিয়ে আনবে।

ডিমের কুসুম:

ডিমের সাদা অংশের পাশাপাশি কুসুমও ত্বকের জন্য উপকারী। কুসুম ফেটিয়ে তা ত্বকে মাখতে পারেন। তবে তা তোলার সময়ে ভিনিগার ব্যবহার করবেন। তাতে গন্ধ চলে যাবে আর আপনি ত্বক ফর্সা হবে।

দই:

ত্বকের রং ফেরাতে টক দই ও লেবুর রসের মিশ্রণ তৈরি করে ত্বকে লাগান। এতে খানিক জ্বালা ভাব অনুভূত হলেও ফর্সা হতে দারুণ কাজ দেবে।

জিরে:

গোসলের পানিতে জিরে ভিজিয়ে রেখে তা ব্যবহার করুন। এটির ব্যবহারে মাত্র ১০ দিনেই ত্বকের জেল্লা না ফিরলেও দারুণ কাজ দেবে। জিরে বেঁটে নিয়ে তাতে দুধ মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করেও লাগাতে পারেন। ত্বকের রং ফেরাতে দারুণ কাজ দেবে।এভাবে আপনি সাত দিনই নিজের ত্বককে ফর্সা ও উজ্জ্বল করে তুলতে পারেন সহজেই।

এছাড়াও রূপচর্চারজন্য ব্যবহার করুন কাঁচা হলুদ ও দুধ। প্রত্যেকদিন ১ গ্লাস উষ্ণ গরম দুধ নিন আধা চামচ এর সাথে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে পান করুন। আপনি চাইলে মধু মিশিয়ে পান করতে পারবেন।হলুদ মেশানো দুধ ত্বককে ভিতর থেকে উজ্জ্বল করে তোলে।

আপনি যদি চান তবে অন্য একটা কাজ ও করতে পারেন।ইঞ্চি দেড়েকের মত এক টুকরা হলুদ নিন।এরপর টুকরা টুকরা করে কেটে ফেলুন এবং দুধে ভিজিয়ে ফুটান।দেখবেন গাঢ় হলুন রং ধারণ করব্ এই পানি পান করুন নিয়ম মেনে।

তাছাড়া একটা ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন:

উপকরণঃ- ১ চামচ লেবুর রস ১ টেবিল চামচ কাঁচা হলুদ বাটা ও দুধ।

ব্যবহার করার নিয়ম- প্রথমে দুধ লেবুর রস ও হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। সারা মুখে লাগান।শুকনো হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর ঠান্ডা জল দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিয়ে নরম তোয়ালে দিয়ে আলতো করে মুছে নিন। কখনো গরম জলে মুখ ধোবেন না এবং অন্তত ১২ ঘণ্টা রোদে যাবেন না।

এছাড়াও ফর্সা হওয়ার পৃখিবীর সবচেয়ে সহজ উপায়

ঘরোয়া ব্লিচ: একটি টমেটো নিয়ে তার ভিতর থেকে ভালো ভাবে সংগ্রহ করে ভালোভাবে রগড়ে নিয়ে তার সাথে লেবুর রস যোগ করে নিয়ে আলতো করে মূখে লাগান। ব্যাস ত্বক হবে ঝলমলে ।সাবধান সাবান ব্যাবহারের ক্ষেত্রে।

শশা ও তরমুজের মাস্ক: শশা ও তরমুজের মাস্ক ব্যাবহার করলে একই সাথে ত্বক পরিস্কার,ক্লান্তি ও উজ্জলতা কেটে যাবে।

প্রোটিনপ্রাক : দই ,কলা,ডিম দ্বারা তৈরি এই প্যাক ব্যাবহারে আপনি পাবেন পার্লারের মতো ঊজ্জলতা। এগুলোর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সাধারনত দেখা যায়না।

অর্ধেক কলা ,দই ও ডিমের সাদা অংশ একত্রে মিশিযে ব্লেন্ড করে নিয়ে আলতো করে মুখে লাগান ।তারপর ২০থেকে ২৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধূয়ে ফেলুন।

এছাড়াও রইল আরও কয়েক টিপস

• ১ টেবিল চামচ গুঁড়ো দুধ,১ টেবিল চামচ মধু,১টেবিল চামচ লেবুর রস এবং আধা টেবিল চামচ বাদামের তেল ভালো ভাবে মিশিয়ে মুখে ১০-১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন।তারপর পরিষ্কার করুন।এই প্যাকটি মুখে শাইন আনবে আর রোদে পোড়া ভাব দূর করবে।

• বেশন,দুধ ২ চা চামচ এবং লেবুর রসের মিশ্রন মুখে,গলায় লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।সপ্তাহে ২বার এটা লাগান আপনার গায়ের রঙ অবশ্যই উজ্জ্বল হবে।

• আমরা সবাই কমলা খেয়ে খোসাটা ফেলে দিই,অথচ এই ফেলনা জিনিসটাই আপনাকে পৌছে দিবে আপনার স্বপ্নের অনেক কাছাকাছি।কমলার খোসা রোদে শুকিয়ে নিন।তারপর মিহি করে গুঁড়ো করে নিন।তারপর ১ টেবিল চামচ গুঁড়োর সাথে ১ টেবিল চামচ টক দইয়ের পেস্ট মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

• ঝকঝকে ত্বকের জন্য চন্দন গুঁড়োর অবদান অনস্বীকার্য। চন্দন গুঁড়োর সাথে দুধ মিশিয়ে প্রত্যেকদিন হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। অল্প দিনের মধ্যে আপনার মুখে হাসি ফুটবেই।

• আপনার যদি টমেটো তে অ্যালার্জি না থেকে থাকে তাহলে কয়েক ফোঁটা লেবুর রসের সাথে টমেটোর ক্লাথ মিশিয়ে মুখে এবং গলায় ব্যবহার করুন ফর্সা ত্বকের জন্য আর ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

• আধা কাপ চায়ের লিকার(ঠাণ্ডা),২ চামচ চালের গুঁড়ো, আধা চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগান।চালের গুঁড়ো স্ক্রাবার হিসেবে কাজ করবে আর মধু মুখের আর্দ্রতা বজায় রাখবে।

• শশার রস আর মধু সমান পরিমাণ নিয়ে ১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন।এটি শুষ্ক ত্বকের জন্য অনেক উপকারী।তৈলাক্তও ত্বকে মধুর বদলে লেবু ব্যবহার করতে হবে।

• সপ্তাহে একবার পাকা কলা চটকিয়ে মুখে লাগান আর ৩/৪ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।মুখে লুকিয়ে থাকা সব ময়লা নিমিষে পালিয়ে যাবে আর আপনি হয়ে উঠবেন আরো আকর্ষণীয়।

• ২ টেবিল চামচ বেসন,২ চিমটি কাঁচা হলুদ ,২-৩ ফোঁটা লেবুর রস আর ১ চা চামচ দুধ দিয়ে প্যাক বানিয়ে ফেলুন।মুখে ৫ মিনিট ভালো ভাবে ম্যাসাজ করুন এই প্যাকটি।তারপর ২০ মিনিট পরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।তবে মনে রাখবেন হলুদ কিন্তু সবার ত্বকের জন্য নয়। তাই আগে একটু টেস্ট করে নিবেন কাঁচা হলুদ আপনার বন্ধু না শত্রু।

• কাঁচা আলুর রস অথবা আলু পাতলা করে কেটে অথবা আলুর পাল্প দিনে ২বার করে ব্যবহার করলেও ভালো ফল পাবেন।

=১/২ কাপ চায়ের লিকার(ঠাণ্ডা), ২ চামচ চালের গুঁড়ো, আধা চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগান। চালের গুঁড়ো স্ক্রাবার হিসেবে কাজ করবে আর মধু মুখের আর্দ্রতা বজায় রাখবে।

=শশার রস আর মধু সমান পরিমাণ নিয়ে ১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন। এটি শুষ্ক ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। তবে তৈলাক্ত ত্বকে মধুর বদলে লেবু ব্যবহার করতে হবে।

=সপ্তাহে একবার পাকা কলা চটকিয়ে মুখে লাগান আর ৩/৪ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। মুখে লুকিয়ে থাকা সব ময়লা নিমিষে পালিয়ে যাবে আর আপনি হয়ে উঠবেন আরও আকর্ষণীয়।

=তৈলাক্ত ত্বক উজ্জ্বল করতে মুলতানি মাটি, থেঁতো করা পদ্মপাপড়ি ও নিমপাতা বাটা এবং চালের গুঁড়ো মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন। মুখে-গলায় লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ধুয়ে ফেলার পর মুখে কাঁচা দুধ লাগিয়ে রাখুন আরও আধা ঘণ্টা।

=তিল বেটে নিন অথবা গুঁড়ো করে নিন। এতে সামান্য পানি মিশিয়ে ভালো করে চটকে নিন। এবার ছেঁকে নিন। ছাঁকার পর একটা সাদা রঙের তরল পাবেন সেটা মুখে লাগান, বিশেষ করে রোদে পোড়া জায়গায়। আধা ঘণ্টা পর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। অচিরেই ত্বকের রঙ ফিরে পাবেন।

=মসুর ডাল গুঁড়ো করে নিন মিহি করে। তার মধ্যে ডিমের হলুদ অংশটা মেশান। রোদের মধ্যে এই পেস্টটা শুকিয়ে নিন ভালো করে। একদম মচমচে হয়ে গেলে গুঁড়ো করে শিশির মধ্যে ভরে রেখে দিন। প্রতিদিন রাতে শোবার আগে ২ ফোটা লেবুর রসের সঙ্গে ১ চামচ দুধ ও এই গুঁড়ো খানিকটা মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। আধ ঘন্টা রাখার পরে মুখটা ধুয়ে ফেলুন। মুখ ধোয়ার পর কাঁচা দুধ খানিকটা তুলোতে নিয়ে মুখে বুলিয়ে নিন। আরও ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

আশা করছি টিপস গুলো আপনাদের কাজে লাগবে। কিন্তু অবশ্যই খেয়াল রাখবেন উপাদানগুলোর সাথে আপনার ত্বক মানিয়ে নিতে পারে কিনা। আপনার এক বন্ধু বা আত্মীয় এক উপাদান দিয়ে উপকার পায় বলে আপনিও পাবেন এমন কোন কথা নেই।

সেজন্য বিভিন্ন উপাদানের প্যাকের রেসিপি দেয়া হয়েছে । সব সময় আগে অল্প করে হাতে লাগিয়ে দেখবেন কোন ধরণের চুলকানি কিংবা জায়গাটা লাল হয়ে যাচ্ছে কিনা,তারপর পছন্দসই প্যাকটি বেছে নিন।

নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট ৫:৩৭  পিএম,১৮ জুন ২০১৬,শনিবার

এইউ

Leave a Reply