Home / বিনোদন / ক্লাস ফাঁকি দিয়ে টয়লেটে লুকাতাম, সিক্সেই বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছি
ক্লাস ফাঁকি দিয়ে টয়লেটে লুকাতাম, সিক্সেই বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছি

ক্লাস ফাঁকি দিয়ে টয়লেটে লুকাতাম, সিক্সেই বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছি

জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেলেও তার ভিতটা মজবুত হয়েছে নৃত্যের মাধ্যমে। নাচে সম্মাননা স্বরূপ পেয়েছেন সেরা নৃত্য শিল্পী (২০০৩)-এর জাতীয় পুরস্কার, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি পুরস্কার (২০০৬), হলদিয়া উৎসব পুরস্কার (ভারত), সেরা নৃত্য শিল্পী (২০০৮), ইয়ুথ ফেডারেশন পুরস্কার (মালয়েশিয়া), সেরা নৃত্য শিল্পী (২০১০) প্রভৃতি।

বেশ কয়েক বছর ধরেই মডেলিং ও অভিনয়ে মেধা ও প্রতিভার প্রমাণ দিচ্ছেন তিনি। কাজ করেছেন নির্মাতা অনিমেষ আইচের ‘ভয়ংকর সুন্দর’ ছবিতে। এখানে তার বিপরীতে রয়েছেন কলকাতার প্রখ্যাত অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। বলছি আশনা হাবিব ভাবনার কথা।
শোবিজের ব্যস্ত এই শিল্পীর জীবনের বেশ কিছু প্রথম তথ্য নিয়ে জাগো নিউজের বিনোদনের এই আয়োজন-

প্রথম স্কুল
আমার প্রথম স্কুল রাইফেলস পাবলিক স্কুল। এটির নাম বর্তমানে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ রাইফেলস পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ। স্কুলটি পিলখানাতে অবস্থিত। পাঁচ বছর বয়সে আমি স্কুলে ভর্তি হই। প্রথম প্রথম বাবা-মা স্কুলে নিয়ে যেতেন আবার নিয়ে আসতেন। তারপর ‘মামু ভাইয়া’র সাথে যাওয়া আসা করতাম। তিনি ছিলেন আমার মায়ের মামা। স্কুল শেষ হলে মামুভাইয়ার সাথেই আমি কলেজে যেতাম।

প্রথম শিক্ষক
আমার প্রথম শিক্ষক হচ্ছেন আমার মা। মা আমাকে হাতে ধরে, কোলে নিয়ে লেখা শিখিয়েছেন। কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ সেটা মায়ের কাছ থেকেই প্রথম শিখেছি। সবমিলিয়ে বলবো মা’ই আমার প্রথম শিক্ষক।

ক্লাস ফাঁকি
ভাবনা বলেন, ‘আমাদের স্কুলের পাশে বড় একটা অডিটোরিয়াম ছিল। এখনো সেটা আছে। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে প্রথমে আমি অডিটোরিয়ামে যেতাম। এর পর সেখান থেকে খুব সাবধানে পালিয়ে বাসায় ফিরতাম। আমার বন্ধুরাও এভাবে পালাত। মাঝেমধ্যে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে স্কুলের টয়লেটে লুকিয়ে থাকতাম। ক্লাস চলাকালীন কমনরুমে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করেও সময় কাটিয়েছি অনেক। এ জন্য টিচারদের বকাও শুনেছি। তবুও ক্লাস ফাঁকি দিতাম আমি। আর এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস খুব মনোযোগ দিয়ে করি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দিন
আমি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউল্যাবে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়ছি। প্রথম যেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি তখন মনে আছে আমার শুটিংয়ের তাড়া ছিল। ক্লাসে বসে ভাবছিলাম, ইশ! কখন যে ক্লাস শেষ হবে! আমার শুটিং আছে। প্রথম ইউনিভার্সিটিতে পা রাখার আনন্দটা তেমন করে পাইনি। খুব আফসোস হয় জানেন…. হা হা হা…

প্রথম অভিনয়
আমার বয়স যখন দুই বছর তখন একটা বিজ্ঞাপনে কাজ করেছিলাম। সেদিক থেকে ওটাই ছিলো প্রথমবারের মতো ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে অভিনয় করা। আর নাটকের প্রথম অভিনয় করেছি ‘আমাদের নূরুল হূদা’তে। নাটকটি তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।

প্রথম পারিশ্রমিক
আমার প্রথম পারিশ্রমিকটা আসে নাচ থেকেই। যেহেতু আমি ছোট বেলা থেকেই নাচের সাথে জড়িত সেজন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে নাচের পারফর্ম করতাম। মনে আছে আজ থেকে প্রায় বছর দশেক আগে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে একটা অনুষ্ঠানে পারফর্ম করে ১ হাজার টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলাম। টাকাটা পাওয়ার পর কি যে খুশি হয়েছিলাম সেটা বলে বোঝাতে পারব না।

প্রথম পড়া গল্প
গল্পের বই পড়তে আমার বরাবরই ভালো লাগে। যতদূর মনে আছে প্রথম পড়েছিলাম সিনড্রেলা সিরিজের বই। এরপর তুষার কন্যাসহ অনেক কার্টুন সিরিজের বই পড়েছি। গল্পের বইয়ের বিভিন্ন সিরিজ গাদাগাদা জমে গিয়েছিলো এক সময়।

প্রথম চলচ্চিত্র
উইলিয়াম ওয়াইলারের ‘রোমান হলিডে’ আমার প্রথম দেখা চলচ্চিত্র। ১৯৫৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মার্কিন এই ছবিটি ছিলো রোমান্টিক কমেডি ধাঁচের। বেশ লেগেছিলো। এখনও এই ছবিটি আমার দেখা সেরা চলচ্চিত্রগুলোর একটি। আর জীবনের প্রথম দেখা ছবি বলে একটা বাড়তি ভালো লাগা তো আছেই।

প্রথম প্রেম
সেটাতো অনেক আগের কথা। মনে হয় প্রথম স্কুলে ভর্তি হওয়ার বেশ কিছু পর সম্ভাবত ক্লাস টু’তে পড়ার সময় এক সহপাঠীর সাথে প্রেম হয়। আসলে সেটা যে প্রেম ছিলো তখন বুঝতে পারিনি। বুঝেছি অনেক পরে। সেই ছোট্ট বয়সে কারো জন্য ছটফট করা, কারো ঘোরে থাকা, কাউকে বারবার দেখতে চাওয়া- প্রেম নয় তো কী? এসব ভাবলে এখন খুব হাসি আসে। জানিনা সেই বেচারা এখন কোথায় কী করে বেড়াচ্ছে!

বিয়ের প্রস্তাব
এটা নিয়ে অনেক মজার ঘটনা আছে। ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় প্রথম বিয়ের প্রস্তাব পাই। আমার নানা বাড়ি পুরান ঢাকায়। সেখানে একটা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে পরিবারের সবার সাথে আমি বেড়াতে যাই। তারপর কিছুক্ষণ পর খেয়াল করি কিছু লোক আমাকে লুকিয়ে দেখছে আর কানে মুখে কথা বলছে। কিছুক্ষণ পর তারা চলে যায়। পরে ওরা আমার মাকে জানালো, তাদের ছেলের জন্য আমাকে তাদের পছন্দ হয়েছে! মা এই কথা শুনেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন। রাগে ওই হলুদের অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে আসেন আমাকে নিয়ে। পরে তারা বাড়ি পর্যন্তও এসেছিলো বিয়ের দাবি নিয়ে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।