Home / সারাদেশ / কোয়েল পাখি পালন করে স্বাবলম্বী হোসেন আলী
কোয়েল পাখি পালন করে স্বাবলম্বী হোসেন আলী

কোয়েল পাখি পালন করে স্বাবলম্বী হোসেন আলী

নওগাঁ করেসপন্ডেন্ট :

শখের বসে কোয়েল পাখি পালন করে সফলতার মুখ দেখছেন হোসেন আলী। নওগাঁ সদরের আনন্দ নগর মহল্লায় ৩টি শেডে এখন প্রায় ৫ হাজার কোয়েল পাখি পালন করছেন তিনি। তার খামার থেকে এক হাজার কোয়েল পাখি ডিম দিচ্ছে এবং ৪ হাজার পাখি মাংসের জন্য পালন করা হচ্ছে। প্রাণী সম্পদ বিভাগের কোন পরামর্শ এবং সহযোগিতা ছাড়াই তিনি এত দূর এসেছেন বলে জানান।

হোসেন আলী জানান, গত ৫ বছর আগে শখের বসে ডিম খাওয়ার জন্য স্ত্রী মরিয়ম বেগমের সাথে পরামর্শ করে ২০০ কোয়েল পাখি কিনে ঘরের মেঝেতে পালন শুরু করেন। মাত্র ১০ হাজার টাকা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। কয়েক দিনের ডিম জড়ো করে বাজারে বিক্রি করেন। এক প্রতিবেশী পরামর্শ দেন ডিম ফুটানোর জন্য। তার পরামর্শ অনুসারে বাজার থেকে ১৫হাজার টাকা দিয়ে ডিম ফুটানোর মেশিন কিনে তাতে বাচ্চা ফুটানো শুরু করেন।

হোসেন আলী আরো জানান, মেশিনে বাচ্চা ফুটতে প্রায় ১৮দিন সময় লাগে। ক্রমেই কোয়েল পাখি বৃদ্ধি পেতে থাকে। কোয়েল পাখি এবং ডিম বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় বছরে ৩টি মেশিন কেনেন। বর্তমানে মোট ৪টি মেশিন দিয়ে ৪দিন পর পর ৩ হাজার ডিম মেশিনে লোড দিয়ে বাচ্চা উৎপাদন করছেন। এক দিনের ফুটানো বাচ্চা ৫-৬ টাকা করে বিক্রি করে থাকেন।

প্রতিটি কোয়েল পাখি প্রায় ৯ মাস ডিম দিয়ে থাকে। এক মাস বয়সী এবং ডিম দেয়া শেষ হয়েছে এমন প্রতিটি কোয়েল পাখি ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হয়। এক হাজার কোয়েল পাখির প্রতি মাসে ৫ বস্তা খাবারের প্রয়োজন হয়। প্রতি বস্তার দাম ২২৫০টাকা করে। কোয়েল পাখির রোগ বালাই খুবই কম হয়। এক হাজার কোয়েল পাখি খরচ বাদে প্রায় দুই হাজার টাকা লাভ থাকে। ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী, নওগাঁসহ বিভিন্ন জেলায় কোয়েল পাখি পাইকারী বিক্রি করে থাকেন বলে জানান হোসেন আলী।

স্ত্রী মরিয়ম বেগম জানান, সংসারে অভাব ছিল। অভাবের তাড়নায় জীবিকা নির্বাহের জন্য রিকশা চালাতেন। কোয়েল পাখি পালন করে এখন ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। সংসারে এখন স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। দুই ছেলেকে ভালো স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। একটি নিজস্ব অটোচার্জার কিনেছেন। মেশিন এবং শেড খরচসহ প্রায় ৬ লাখ টাকা জমিয়েছেন। পাখি পালনের পাশাপাশি স্বামী চার্জারও চালান। খেয়ে পরে বছরে ভাল আয় থাকছে বলে জানান মরিয়ম বেগম।

নওগাঁ সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহফুজার রহমান জানান, হাঁস-মুরগির মতো কোয়েল পাখি পালন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হচ্ছে। কোয়েল পাখির রোগব্যাধি কম। এজন্য টিকা দিতে হয় না এবং কৃমির ঔষধও খাওয়াতে হয় না। অনেকে আত্মকর্মসংস্থানের জন্য কোয়েল পাখি পালনকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

আপডেট:   বাংলাদেশ সময় : ১১ আষাঢ় ১৪২২ বঙ্গাব্দ, বুধবার ২৪ জুন ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৪:০৪ অপরাহ্ন

চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/ এমআরআর/২০১৫

চাঁদপুর টাইমস ডট কম-এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না