Home / জাতীয় / কীভাবে বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেবেন
কীভাবে বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেবেন

কীভাবে বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেবেন

চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক :

বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন, তা অনেকেই জানতে চেয়েছেন। বলেছিলাম যে ফেসবুকে এই নিয়ে লিখব। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী অর্থাৎ ৩টি বিষয়ে (বাংলাদেশ বিষয়াবলী ১ম ও ২য় পত্র এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী) কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন, তা-ই জানাচ্ছি। আমি যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি, সেটিই এখানে শেয়ার করলাম। তাই ইচ্ছে হলে এটি কেউ গ্রহণ করতে পারেন, ইচ্ছে হলে বর্জন করতে পারেন আপনাদের ভালো লাগলে আগামী দুইদিনে বাকি বিষয়গুলোর ওপরও পরামর্শ দিতে পারি!

বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন

১. জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ সাম্প্রতিক ইস্যুগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। এজন্য নিয়মিত পেপার পড়তে পারেন, টিভি ও রেডিওতে খবর শুনতে পারেন। আর ফেসবুকের ‘News Feed’ তো আছেই তাছাড়া আশাকরি, সাধারণ তথ্যগুলো প্রিলিমিনারী পরীক্ষার সময়ই সবাই কমবেশি পড়েছেন।

২. যেসব প্রশ্নের উত্তর পয়েন্ট আকারে লেখা সম্ভব, সেগুলোর উত্তর পয়েন্ট আকারেই লেখা উচিত। এতে উত্তর গোছানো ও লেখা পরিচ্ছন্ন লাগে। তবে একটি পয়েন্ট লিখে বর্ণনার পর আরেকটি পয়েন্ট হঠাৎ মনে না-ও আসতে পারে অথবা পয়েন্টভেদে বর্ণনা ছোট-বড় হতে পারে আমি এক্ষেত্রে একটি টেকনিক অবলম্বন করেছি। প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় নির্দিষ্ট পরিমাপের জায়গা ফাঁকা রেখে-রেখে পয়েন্টগুলো আগে একবারে লিখে গেছি। তারপর মাঝের স্থানগুলো প্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়ে পূরণ করেছি। এতে পয়েন্টগুলোর বর্ণনার আকৃতিতে সুষমতা থাকে এবং প্রশ্নের উত্তরগুলোর আকৃতিতেও সামঞ্জস্যতা থাকে। সময় ব্যবস্থাপনাও সহজ হয়

৩. গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য খাতায় একসঙ্গে লিখে রাখলে পরীক্ষার আগের রাতে রিভিশনে বেশ সুবিধা হয়। যেমন:
i) আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং তার ঐতিহাসিক পটভূমি সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ তারিখগুলো।
ii) আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংগঠন সম্পর্কিত তথ্য।
iii) রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, সংবিধানের ১১টি ভাগের মূল বিষয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ধারা।

৪. টেকনিকগুলোও খাতায় একসঙ্গে লিখে রাখতে পারেন যেমন:
i) D-8 (Developing-Eight) ভুক্ত ৮টি দেশের নাম মনে রাখার জন্য: মা-বাপ নাই তুমিই সব
মা = মালয়েশিয়া
বা = বাংলাদেশ
প = পাকিস্তান
না = নাইজেরিয়া
ই = ইন্দোনেশিয়া
তু = তুরস্ক
মি = মিশর
ই = ইরান
ii) ASEAN ভুক্ত ১০টি দেশের নাম মনে রাখার জন্য: MTV-তে FILM দেখলে BCS হবে না
M = Myanmar
T = Thailand
V = Vietnam
F = Philippines
I = Indonesia
L = Laos
M = Malaysia
B = Brunei
C = Cambodia
S = Singapore

৫. আবার মনে রাখতে পারেন ভিন্ন টেকনিকেও! যেমন:
i) বাংলাদেশ World Bank, IMF, UNESCO, WHO, ILO, FAO ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাগুলোর সদস্যপদ লাভ করে ১৯৭২ সালে (আলাদা অালাদাভাবে সাল পড়লে অনেক সময় মনে থাকে না)।
ii) সদর দপ্তরের ক্ষেত্রে (এক্ষেত্রেও অালাদাভাবে পড়লে অনেক সময় মনে থাকে না):
নিউইয়র্ক – জাতিসংঘ (UN), UNICEF, UNDP, UNIFEM, UNFPA
জেনেভা – জাতিপুঞ্জ, জাতিসংঘের ইউরোপীয় সদর দপ্তর, WHO, ILO, WTO, WMO, ITU, UNHCR, UNCTAD

ইংরেজী ১ম এবং ২য় পত্র:
i) Essay, Letter, Amplification, Precis অথবা Report Writing – এগুলো কিছুই মুখস্থের ব্যাপার নয়; তবে এসবের লেখার ফরম্যাট জানা খুব জরুরি। বিভিন্ন ধরনের Letter এবং Application লেখার শুধু ফরম্যাটগুলো একটি খাতায় তুলে রাখতে পারেন পরীক্ষার আগের রাতে নিজেকে ঝালাই করে নেওয়ার জন্য
ii) কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যও মনে রাখা জরুরি। যেমন: Report Writing-এ নিজের আবেগ/মতামত তুলে ধরা যায় না। আবার, Precis-এর আকৃতি বড় না করে চারটি প্রাসঙ্গিক নির্ভুল বানানের লাইন লিখলেই বেশি নম্বর পাওয়া যায়
iii) Essay, Amplification এবং Translation-এর জন্য ইংরেজি সংবাদপত্র এবং বই বুঝে পড়ুন। যে শব্দগুলো নতুন শিখলেন, সেগুলো আলাদা একটি খাতায় তুলে রাখলে রিভিশনে সুবিধা হবে। যেমন: কিশোর অপরাধ নিয়ে লিখতে গেলেন; কিন্তু এর ইংরেজিই যদি না জানেন, তাহলে লিখবেন কীভাবে? তাই সংবাদপত্র ঘেঁটে এ ধরনের শব্দগুলো কয়েকদিন টুকলেই দেখবেন অনেক কিছু জানা হয়ে গেছে!
iv) Grammatical অংশের জন্য Appropriate Preposition, Voice, Narration ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।
v) কিছু সুন্দর বাক্য খাতায় লিখে রাখতে পারেন। সেগুলো পরে পরীক্ষায় বিভিন্ন প্রসঙ্গে লিখতে পারেন। যেমন: Corruption, Population growth বা Environmental pollution – যা সম্পর্কেই লিখুন না কেন, এই বাক্যটি ব্যবহার করতে পারেন। Corruption/Population growth/Environmental pollution is a burning question in our country.

গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা:
i) গণিতের ক্ষেত্রে অনুশীলনের বিকল্প নেই।
ii) সূত্রগুলো একটি খাতায় একসঙ্গে লিখে রাখতে পারেন। এতে পরীক্ষার আগের রাতে গণিতের আসল অস্ত্র সুবিন্যস্ত অবস্থায় হাতের কাছে পাবেন
iii) বিগত এক যুগে বিসিএস পরীক্ষায় আসা গাণিতিক প্রশ্নের সমাধান বুঝে করে ফেলুন। এতে ভালো ফল পাবেন। কারণ বিগত বছরের প্রশ্ন হুবহু না এলেও প্রশ্নের প্যাটার্নে কিছুটা মিল থাকে।
iv) মানসিক দক্ষতা বিষয়ের জন্য গত ৩-৪ বছরের প্রশ্ন দেখলে আপনার আইডিয়া হবে প্রশ্ন কেমন হয়।

বাংলা ১ম এবং ২য় পত্র:
i) বাংলা ভাষা ও সাহিত্য অংশের জন্য ঢালাওভাবে না পড়ে সিলেবাসটি আগে জেনে নিন (কারণ সিলেবাসে সীমিতসংখ্যক লেখকের নাম আছে) এবং প্রশ্নের প্যাটার্ন দেখে নিন। ব্যাকরণ সংশ্লিষ্ট অংশের জন্যও এ কথা প্রযোজ্য।
ii) প্রবন্ধ রচনা, ভাব সম্প্রসারণ, সারাংশ বা পত্র/আবেদনপত্র লেখার ফরম্যাট ইংরেজির মতোই একটি খাতায় লিখে রাখতে পারেন।
iii) প্রবন্ধ পয়েন্ট এবং সাব-পয়েন্ট দিয়ে লিখতে হয়। সব রচনায় ভূমিকা, মূল অংশ এবং উপসংহার থাকেই। তাছাড়া মূল অংশে কিছু কমন পয়েন্ট থাকে (যেমন: কী, কারণ, প্রভাব, করণীয় ইত্যাদি)। রচনা মুখস্থের কিছু নেই; কারণ দেখবেন, আপনি যা জানেন, তা-ই লিখে শেষ করতে পারছেন না। বরং লেখায় লাগাম টানা জরুরি। আগেই ভেবে রাখতে পারেন, ৪০ নম্বরের একটি রচনার জন্য কত পৃষ্ঠা লিখবেন (এক ঘণ্টায় আপনি যতটুকু লিখতে পারেন)। একটি রচনা বিরতিহীনভাবে লিখে আরেকটি একেবারে ছোট হলে কিন্তু সমস্যাই প্রবন্ধ রচনার ক্ষেত্রে একটি কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। গত পোস্টেও বলেছিলাম। প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় নির্দিষ্ট পরিমাপের জায়গা ফাঁকা রেখে-রেখে পয়েন্টগুলো আগে একবারে লিখে যেতে পারেন। তারপর মাঝের স্থানগুলো প্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে। এতে পয়েন্টগুলোর বর্ণনার আকৃতিতে সুষমতা থাকবে এবং প্রশ্নের উত্তরগুলোর আকৃতিতেও সামঞ্জস্যতা থাকবে। সময় ব্যবস্থাপনাও সহজ হবে

সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি:
i) এক্ষেত্রে বিগত বছরের প্রশ্নগুলো দেখা অনেক জরুরি।
ii) নবম-দশম শ্রেণীর সাধারণ বিজ্ঞান বই এবং অন্য সহায়ক বইও দেখা প্রয়োজন।

সংকলন : আলম খান