Home / শীর্ষ সংবাদ / এক রাতেই শেষ হয়ে গেলো ফরিদগঞ্জের প্রতিবন্ধী ফরিদের স্বপ্ন
এক রাতেই শেষ হয়ে গেলো ফরিদগঞ্জের প্রতিবন্ধী ফরিদের স্বপ্ন

এক রাতেই শেষ হয়ে গেলো ফরিদগঞ্জের প্রতিবন্ধী ফরিদের স্বপ্ন

প্রতিবন্ধীতার বাধা ডিঙ্গিয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছিলেন ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার যুবক ফরিদ। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজের কর্মস্পৃহায় অনেকটা পথ এগিয়েও গিয়েছিলেন তিনি। বৃদ্ধ বাবা মায়ের চিকিৎসা ও দু’মুঠো অন্ন যোগানের জন্যে তিনি সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নিজের দোকানে কাজ করতেন।

কিন্তু বুধবার(১৬ আগস্ট) রাতের চুরির ঘটনায় তার সকল স্বপ্ন ধূলিসাৎ হওয়ার পথে। চোর দোকানের তালা ভেঙ্গে কম্পিউটার, মোবাইল ও নগদ অর্থসহ প্রায় এক লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। দোকানের মালামাল চুরি হওয়ার পর প্রতিবন্ধী ফরিদের দু’চোখে শুধুই হতাশা। কিভাবে এখন তার বৃদ্ধ বাবা মায়ের চিকিৎসা হবে। হাঁড়িতে জুটবে দু’মুঠো ভাত।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের পূর্ব বড়ালী হাজী বাড়ির সোলায়মান হাজীর ছেলে মো. ফরিদ হোসেন(২৭)। তার শরীরের কোমর থেকে পা পর্যন্ত অকেজো হয়ে গেছে। কিন্তু পঙ্গু শরীর নিয়ে সে বসে থাকেনি। বেছে নেয়নি ভিক্ষাবৃত্তির মতো পেশা। সে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলো সে যত দিন বেঁছে থাকবে নিজের উপার্জন দিয়ে চলবে। সিদ্ধান্ত অনুসারে ঢাকার পক্ষাগ্রস্থ পূর্নবাসন কেন্দ্র থেকে কম্পিউটার ও মোবাইল মেরামতের উপর ৬ মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। পরে পূর্ব বড়ালী কবির জুনিয়র হাইস্কুল সংলগ্ন স্থানে ফরিদ কম্পিউটার স্টোর এন্ড ভ্যারাইটিজ নামে একটি দোকান দেন। হুইল চেয়ারে বসে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তিনি দোকানদারী করতেন।

প্রতিদিনের মত বুধবার রাতেও তিনি দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যান। আর এই রাতই প্রতিবন্ধী এই ক্ষুদ্র ব্যবসয়ীর জন্য কাল রাত হয়ে এসেছে। চোরের দল দোকানের তালা ভেঙ্গে দোকান থেকে একটি কম্পিউটার, গ্রাহকের ৭টি মোবাইল, ক্যাচ কার্ড ও ক্যাশ বাক্সসহ নগদ টাকা নিয়ে যায়।

ফরিদ চাঁদপুর টাইমস প্রতিবেদকের কাছে হাউমাউ করে কেঁদে উঠে বলেন, ‘সাংবাদিক ভাই আমি ভিক্ষা করতে চাই না। আমি কাজ করে খেতে চাই। রাতের বেলায় চোরের দল আমার দোকান থেকে নগদ টাকাসহ প্রায় এক লাখ টাকার মালামালা নিয়ে যায়। আমার অপরাধ কি? আমি প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে আমার চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধারের দাবি জনাচ্ছি।’
অপরএক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিমাসে দোকান থেকে ১০-১৫ হাজার টাকা আয় করি। যা দিয়ে আমার বৃদ্ধ বাবা মায়ের চিকিৎসা ও খাবারের ব্যবস্থা করে আসছি।’

এদিকে স্থানীয় লোকজন জানায়, ‘এই এলাকাতে একটি ভবঘুরে চক্র সক্রিয় রয়েছে। যারা এলাকাতে মাদক বিক্রি, ইভটিজিং, চুরি-ডাকাতির সাথে জড়িত। সম্প্রতি ওই এলাকা একাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে।’

এদিকে পৌর মেয়র মাহফুজুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ওই প্রতিবন্ধী যুবককে আর্থিক সহযোগীতার আশ^াস প্রদান করেছেন।

এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, ‘এনিয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ’

প্রতিবেদক- আতাউর রহমান সোহাগ
: আপডেট, বাংলাদেশ ২: ০০ এএম, ১৮ আগস্ট ২০১৭, শুক্রবার
ডিএইচ

Leave a Reply