Home / শীর্ষ সংবাদ / চাঁদপুর শ্রীরামদীতে এক পরিবারে চার প্রতিবন্ধী : পায়নি কোন ভাতা
চাঁদপুর শ্রীরামদীতে এক পরিবারের চার প্রতিবন্ধী : পায়নি কোন ভাতা

চাঁদপুর শ্রীরামদীতে এক পরিবারে চার প্রতিবন্ধী : পায়নি কোন ভাতা

চাঁদপুর শহরের পুরাণ বাজার মধ্য শ্রীরামদী কবরস্থান রোড এলাকায় একই পরিবারে ৪ জন সদস্য প্রতিবন্ধী কেউই পাননি কোন প্রতিবন্ধী ভাতা। আর অসহায় পিতা আলম কাজী (৩৫) নিজেও শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে রিক্সা চালিয়ে অর্থ উপার্জন করে ৫ জন সদস্য নিয়ে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে সংসারের হাল টানছেন।

কিন্তু আজো তার ভাগ্যে জোটেনি কোন প্রতিবন্ধী ভাতা। তাই যা হবার তাই হচ্ছে। কথায় আছে ‘নুন আনতে যার পানতা পুরায়’। আর এ প্রবীন প্রবাদ বাক্যটির প্রমান আলম কাজী ও তার পরিবার।

জানাযায় চাঁদপুর শহরের ব্যবসায়ি এলাকা পুরাণ বাজার মধ্য শ্রীরামদী কবরস্থন রোড এলাকায় শারীরিক প্রতিবন্ধী আলম কাজীর বসবাস। এছাড়া তার ঘরে আরো তিনজন শারীরিক ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রয়েছে।

তারা হলো তার শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে রায়হান (১২), আ. জলিল (৮) ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মেয়ে মর্জিনা আক্তার (১৫)। এদের মধ্যে আলম কাজীর একটি হাত নেই সে জন্মগত ভাবেই শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েছেন বলে জানায়।

আর তার দুই ছেলে জলিল ও রায়হান, তারা দু’জনও জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। বড় ছেলে রায়হান শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে সারাদিন রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। তাকে বেঁধে না রাখা হলে সে সবার অজান্তে শহরের বিভিন্নস্থানে চলে যায়।

একই সমস্যায় ভুগছেন ছোট ছেলে জলিল। এছাড়া বড় মেয়ে মর্জিনা আক্তার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বলে তার বাবা জানান।

তার চোখের আলো নেই। দিনের বেলায় কিছুটা অনুমান করে চলতে পারলেও রাতের বেলায় তার পৃথিবী পুরো অন্ধকার। এভাবেই শারীরিক ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় মধ্যে কানামাছি খেলায় চলছে তাদের জীবন তরী।

সংসারের কর্তা প্রতিবন্ধী আলম কাজী জীবন সর্ম্পকে জানতে চাইলে সে জানায়, প্রায় ১৫/১৬ বছর পূর্বে চাঁদপুর শহরের বড়স্টেশন এলাকায় তারা স্বপরিবারে বসবাস করতেন। সে জায়গাটুকু নদীর গর্ভে বিলিন হওয়াতে কোন রকম মাথা গুজার ঠাই হিসেবে বেঁছে নেন শশুর বাড়ি এলাকা পুরাণ বাজার মধ্য শ্রীরামদী কবরস্থান রোড। সেখানে সে স্ত্রী ছেলে সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন।

তিনি সারাদিন রিক্সা চালিয়ে আয় হয় কখনো ৩শ’ কখনো বা ৪শ’ টাকা। অথচ প্রতিদিন সংসার খরচ তার চেয়েও অনেক বেশি। রিক্সা চালিয়ে যা উপার্জন করেন তা কোন ভাবেই একটি সংসার খরচ চলেনা। তার ওপর আবার মাসিক ৩ হাজার টাকা ঘর ভাড়া গুনতে হয়। মাঝে মধ্যে ওই এলাকার মানুষজন যদি কিছু সাহায্য সহযোগিতা করেন, তা মিলিয়ে কোন রকম দিন পার করছেন।

আলম কাজী জানান, সে আজো কারো জন্য কোন প্রকার প্রতিবন্ধী ভাতা পায়নি। তবে গত ক’দিন পূর্বে চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র লায়লা আক্তারের মাধ্যমে তার নিজের জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়ার পক্রীয়া চলছে। তিনি তার কাছথেকে ছবি এবং পরিচয় পত্র নিয়েছেন। কিন্তু তার বাকি প্রতিবন্ধী ৩ সন্তানের জন্য যদি প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়া যেতো তাহলে কাজের পাশাপাশি সে ভাতাসহ ভালোই চলতো তাদের সংসার জীবন।

আলম কাজী যেনো তার সন্তানদের জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা পান সে জন্য চাঁদপুরের প্রশাসনসহ সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছেন।

প্রতিবেদক-কবির হোসেন মিজি
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৮ : ১০ পিএম, ১৮ মে ২০১৭, বৃহস্পতিবার
এইউ

Leave a Reply