Home / চাঁদপুর / ঈদের ছুটিতে চাঁদপুরে চার হত্যা ও অপমৃত্যু
Lash 3

ঈদের ছুটিতে চাঁদপুরে চার হত্যা ও অপমৃত্যু

পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটিতে চাঁদপুরে দু’নির্মম হত্যাকান্ড এবং দু’করুন অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

৩ সেপ্টেম্বর ঈদের ২য় দিন থেকে বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত চাঁদপুর সদর উপজেলার বাংলাবাজার, বাগাদী ইউনিয়ন, ওয়্যালেছ এবং হাজিগঞ্জ উপজেলায় এ হত্যা ও অপমৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটে।

এর মধ্যে ঈদের ২য় দিন ৩ সেপ্টেম্বর রোববার ভাগে কোরবানী দেয়াকে কেন্দ্র করে কুপিয়ে আহত হওয়া হাজীগঞ্জের সাইফুল ইসলাম (২৫) ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় এবং ৪র্থ দিন ৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নে দেবর কতৃক ভাবীকে (শারমিন আক্তার-২২) পেটে ছুড়িকাঘাতে হত্যা করা হয়।

এছাড়া অপমৃত্যুর দুটি ঘটনায় ঈদের ৩য় দিন ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে তাছলিমা বেগম (৪৫) নামে এক নারীর কুপির আগুনে অগ্নিদগ্ধ হয়ে করুন মৃত্যু হয় এবং ৫ম দিনে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাখরপুর বাংলাবাজারে বেপোরোয়া গতির মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় আছিয়া বেগম (৭৫) নামের এক বৃদ্ধার করুন মৃত্যু হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২২ আগস্ট হাজীগঞ্জ উপজেলার ৪নং কালোচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের ওড়পুর গ্রামের তাল বাড়িতে ভাগে কোরবানি দেয়া নিয়ে পূর্বের অংশীদারদের সাথে মারামারিতে সাবেক ইউপি সদস্য নূরুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম আহত হন। পরে ঈদের ২য় দিন ৩ সেম্পেম্বর রোববার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাইফুল মারা যান। পরেরদিন সোমবার সকালে লাশ হাজীগঞ্জ থানায় নিয়ে আসা হয়।

একইদিন চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে রাতেই সাইফুলকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় সাইফুলের বাবা বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামী করে ১০৯, ৩০৭, ৩২৩, ৩২৪ ও ৫০৬ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-১৮। সাইফুল মারা যাওয়ার পরেই ঘটনাটি নতুনভাবে মোড় নিয়েছে।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মান্নান জানান, সাইফুলের বাবার দায়ের করা পূর্বের মামলাটির সাথে শুধুমাত্র ৩০২ ধারা সংযুক্ত করে দিলেই হবে। আর পূর্বের মামলার সাথে এই ধারাটি যোগ করতে হলে আদালতের অনুমোদন লাগবে। আদালতের অনুমোদন পাওয়ার পরেই আসামীদের আটক করা হবে।

এদিকে ঈদের ৩য় দিন সেপ্টেম্বর সোমবার সকালে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাছলিমা বেগম (৪৫) নামে অগ্নিদগ্ধ এক নারীর মৃত্যু হয়। দুই সন্তানের জননী তাছলিমা চাঁদপুর শহরের ওয়্যারলেস মুন্সী বাড়ির শুক্কুর আলীর স্ত্রী।

নিহতের মেয়ে বিথী আক্তার জানান, তার মা তাছলিমা বেগম দীর্ঘদিন যাবৎ মৃগী রোগে ভুগছিলেন। গত ৩০ আগস্ট বুধবার রাতে তিনি মৃগী রোগে আক্রান্ত হয়ে ঘরে থাকা কুপির আগুনে দগ্ধ হন। এতে তার শরীরের অনেকাংশ ঝলসে যায়। রাতেই চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে কর্মরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা রেফার করেন। কিন্তু পরিবারের আর্থিক সঙ্কটের কারণে ঢাকায় না নিয়ে এ হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন থেকে সোমবার তিনি মারা যান।

অপরদিকে ৬ সেপ্টম্বর বুধবার দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাখরপুর বাংলাবাজারে বেপোরোয়া গতির মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় আছিয়া বেগম (৭৫) নামের এক বৃদ্ধা মারত্মক আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাপসাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাতে মৃত বলে জানায়। নিহত আছিয়া বেগম স্থানীয় মৃত খলিল গাজীর স্ত্রী।

নিহত আছিয়া বেগমের নাতী মো. মামুন জানায়, আছিয়া বেগম বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার বাখরপুর বাংলাবাজার এলাকায় তার নিজ বাড়ির রাস্তার সামনে হাটাচলা করছিলেন। এসময় হঠাৎ করে বেপোরোয়া গতির একটি মোটরসাইকে তাকে প্রচন্ড গতিতে ধাক্ক মেরে ফেলে দেয়।

বিষয়টি দেখতে পেরে স্থানীয়রা তাৎক্ষনিক আছিয়া বেগমকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাপসাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। পরে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আছিয়া বেগমকে মৃত বলে জানায়।

এদিকে ঘটনার সমসয় স্থানীয়রা অভিযুক্ত মোটরসাইকেল আরোহীকে আটক করেছে বলে মামুন জানান।

প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
: আপডেট, বাংলাদেশ ১০ : ৪৪ পিএম, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বুধবার
এইউ

Leave a Reply