Home / শীর্ষ সংবাদ / মধ্যরাতে চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ ধরতে নামবে জেলেরা
jatka
ফাইল ছবি : প্রতীকী হিসেবে ব্যবহৃত হলো

মধ্যরাতে চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ ধরতে নামবে জেলেরা

বাজারে ইলিশের অপেক্ষার পহর শেষ হচ্ছে রোববার (২২ অক্টোবর)। টানা ২২ দিন পর আজ মধ্যরাত (১২টার পর) থেকে উঠে যাচ্ছে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা। ফলে আবারও বাজারে দেখা মিলবে মাছের রাজা ইলিশের।

ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণে প্রধান প্রজনন মৌসুম হিসেবে গত ১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত (২২ দিন) ইলিশ ধরা, বিক্রি, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। তবে এ সময়ে (শনিবার পর্যন্ত) মাছ ধরায় সারাদেশে প্রায় এক হাজার ৩’ ৫০ জন জেলেকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

এবার ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সময়ে ২৫ জেলায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪৬২টি জেলে পরিবারকে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় ২০ কেজি করে চাল দিয়েছে সরকার। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে নানা ধরনের কর্মসূচি হাতে নেয় মৎস্য অধিদফতর। মৎস্য অধিদফতরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শেখ মুস্তাফিজুর রহমানকে প্রধান সমন্বয়কারী করে কেন্দ্রীয় মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়।

মৎস্য অধিদফতরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মো. রমজান আলীকে আহ্বায়ক করে আরও একটি টিম গঠন করা হয়। এ টিম অভিযান নিয়ে গঠন করা কন্ট্রোল রুমে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এ ছাড়া ঢাকায় ইলিশ বিক্রি, পরিবহন, মজুদ বন্ধের জন্য সাতটি টিম করেছে। ইলিশ সমৃদ্ধ বরিশাল, চট্টগ্রাম, খুলনা ও ঢাকা বিভাগে একটি করে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়।

চলতি বছর ইলিশ সমৃদ্ধ মৎস্য বিভাগীয় দফতরসহ জেলা ও উপজেলায় কর্মরত মৎস্য অধিদফতরের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাপ্তাহিক ছুটিসহ সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মৎস্য অধিদফতরের সঙ্গে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ, নৌপুলিশ, র্যাব, বিজিবি, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করেছে।

কেন্দ্রীয় মনিটরিং কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী শেখ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘রোববার (২২ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা উঠছে। আমাদের উদ্দেশ ছিল ইলিশ মাছ যাতে নির্বিঘ্নে ডিম পাড়ে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে এবার টাইমিংটা ভালো হয়েছে, যদিও প্রতিবারই একটু এদিক-সেদিক হয়ে যায়। আশা করছি এ উদ্যোগ ইলিশের উৎপাদন অনেকগুণ বাড়িয়ে দেবে।’

তিনি বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে যখন ইলিশ মাছ পেটে ডিম নিয়ে নদীতে আসা শুরু করেছে ঠিক সেই মুহূর্তেই আমরা ধরা নিষিদ্ধ করেছি। আমরা নদীগুলোতে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। উৎসাহ দিয়ে জেলেদের ইলিশ ধরতে না দেয়াই আমাদের উদ্দেশ ছিল। সেদিক দিয়েও আমরা যথেষ্ট সফল। চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও বরিশালের বেশ কিছু অঞ্চল এর ভালো উদাহরণ, সেখানকার জেলেরা মাছ ধরতে নামেনি। একটি স্থানে তাদের মাছ ধরার নৌকা নিজেরাই আবদ্ধ করে রেখেছে।’

প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কিছু কিছু জায়গা থেকে অভিযোগ পেয়েছি, আসল জেলেরা মাছ না ধরে অন্যরা মাছ ধরছে। কারণ এই সময়ে অনেকেই জেলে হয়ে যায়, কারণ প্রচুর ইলিশ মাছ থাকে।’

এবার প্রায় সাড়ে ১৩শ’ জেলেকে জেল দেয়া হয়েছে জানিয়ে মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এবার আইন অমান্যকারীদের জরিমানার চেয়ে জেল দেওয়ার বিষয়েই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। প্রচণ্ড বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও আমাদের অফিসাররা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীতে টহল দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত আমাদের এই অবস্থান থাকবে।’

প্রসঙ্গত, ১৯৫০ সালের মাছ রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন (প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন ফিস অ্যাক্ট, ১৯৫০) অনুযায়ী প্রতি বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে একটি নির্দিষ্ট সময় ইলিশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। গত বছর এ সময় ছিল ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত।

চান্দ্রমাসের ভিত্তিতে প্রধান প্রজনন মৌসুম ধরে এ বছর আশ্বিন মাসের প্রথম চাঁদের পূর্ণিমার দিন এবং এর আগে ৪ ও পরের ১৭ দিনসহ মোট ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ রাখা হয়। এবার ৫ অক্টোবর আশ্বিন মাসের প্রথম চাঁদের পূর্ণিমা ছিল।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

করোসপন্ডেন্ট
: আপডেট, বাংলাদেশ ১ : ১৫ পিএম, ২২ অক্টোবর, ২০১৭ রোববার
এইউ

Leave a Reply