Home / আন্তর্জাতিক / আগুনে পুড়ে যাওয়া গ্রামের ছবি আসছে স্যাটেলাইটে : আ্যামিনেস্ট
আগুনে পুড়ে যাওয়া গ্রামের ছবি আসছে স্যাটেলাইটে : আ্যামিনেস্ট

আগুনে পুড়ে যাওয়া গ্রামের ছবি আসছে স্যাটেলাইটে : আ্যামিনেস্ট

স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিগুলো প্রকাশ করে অ্যামনেস্টির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে বিতাড়নের চেষ্টা করছে’ এই ছবিগুলোই তার প্রমাণ।

গত তিন সপ্তাহ ধরে সেখানে ‘খুবই পরিকল্পিতভাবে একটি নির্দিষ্ট ছকে গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার’ ছবি এখানে উঠে এসেছে।

অ্যামনেস্টির ক্রাইসিস রেসপন্স ডিরেক্টর তিরানা হাসান বলেন, “মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে দেশ থেকে বিতাড়নের লক্ষ্য নিয়েই যে গ্রামগুলোতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে-এগুলো তার অকাট্য প্রমাণ। এটা জাতিগত নির্মূল অভিযান, এ বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।”

পশ্চিমের রাখাইন রাজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ রোহিঙ্গা গ্রাম এখন সম্পূর্ণ খালি, খোদ মিয়ানমার সরকার এ তথ্য দিয়েছে বলে জানায় বিবিসি।

রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে হামলার বর্ণনায় অ্যামনেস্টির পক্ষ থেকে বলা হয়, মিয়ামারের সেনাবাহিনী এক একটি গ্রাম প্রথমে ঘিরে ফেলছে, পলায়নরত গ্রামবাসীর উপর নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে এবং তাদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে।

এটা নিশ্চিতভাবেই ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’।

স্যাটেলাইটের ছবিতে ২৫ অগাস্টের পর লোকবসতি আছে এমন অন্তত ৮০টি জায়গায় বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড সনাক্ত হয়েছে বলে জানায় অ্যামনেস্টি।

গত ২৪ অগাস্ট রাতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে হামলা চালায়। হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ বেশ কয়েকজন নিহত হওয়ার পর থেকে রাখাইনে সেনা অভিযান চলছে।

সেনাবাহিনী কীভাবে গ্রামে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মানুষ মারছে, ঘরের ভেতরে আটকে রেখে কীভাবে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, লুটপাট চালিয়ে কীভাবে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেই বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের কথায়।

যদিও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দাবি তারা রাখাইনে জঙ্গি দমন অভিযান চালাচ্ছে এবং বেসামরিক নাগরিক তাদের লক্ষ্য নয়।

দীর্ঘদিন ধরেই মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ‘অবৈধ অভিবাসী’ বর্ণনা করে তাদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসেছে।

সেনা অভিযান শুরু পর প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন মিয়ানমারের কড়া সমালোচনা করেছে।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেন, “আমি মনে করি, এই জনগোষ্ঠীর পাশে এখন বিশ্ববাসীকে দাঁড়াতে হবে। একটি জাতিগোষ্ঠী হিসেবে তাদের সঙ্গে কী আচরণ করা উচিৎ, সেই কথা বলতে হবে।”

“এই সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে, এই নির্মমতা বন্ধ করতেই হবে।”

রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান না করলে মিয়ানমারের উপর অবরোধ আরোপের হুমকি দিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।

রাখাইনে সেনা অভিযান স্থগিত এবং রোহিঙ্গাদের উপর সহিংসতা বন্ধের জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

বুধবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে গুতেরেস বলেন, রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক পরিস্থিতি বিপর্যয়কর অবস্থায় পৌঁছেছে।

দেশান্তরী রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সহায়তা দিতে তিনি সব দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদও মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযান নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে।

এদিকে, রোহিঙ্গা চরমপন্থিরা রাখাইনে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকদের বাড়িঘরও পুড়িয়ে দিচ্ছে বলে খবর পেয়েছে অ্যামনেস্টি। কিন্তু এ খবরের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ৩: ৪০ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ শুক্রবার
ডিএইচ

Leave a Reply