Home / শীর্ষ সংবাদ / আকাশে মেঘ দেখলেই বিদ্যুৎ উধাও : মোমবাতিতে এইচএসসি পরীক্ষা
আকাশে মেঘ দেখলেই বিদ্যুৎ উধাও : মোমবাতিতে এইচএসসি পরীক্ষা

আকাশে মেঘ দেখলেই বিদ্যুৎ উধাও : মোমবাতিতে এইচএসসি পরীক্ষা

গর্জনের ভয়ে (আকাশে মেঘ দেখলেই) উধাও হচ্ছে বিদ্যুৎ। আর অসহায় হয়ে পড়ছে চলতি এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীবৃন্দ। নেই কোনো প্রতিকার, আছে শুধু অজুহাত।

এভাবেই চলছে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মানুষের কষ্টে চলা জীবন। আর ফায়দা নিচ্ছে পল্লী বিদ্যুৎ। হঠাৎ গর্জন আকাশে মেঘ কিংবা সামান্য বৃষ্টি বাতাসেই মতলব উত্তরে বিদ্যুৎ উধাও হয়ে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

যদি সামান্য বাতাশ বা সামান্য বজ্রপাত বা গর্জন শোনা যায় তাহলে তো দূর্ভেগের শেষ নেই উপজেলাবাসীর।

একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে সারা দিন-রাত চলে গেলেও বিদ্যুতের দেখা মিলে না। কোনো রকম ঘোষণা ছাড়াই সারা দিন-সারা রাত বিদ্যুৎ বিহীন থাকে উপজেলা।

গ্রাহকরা ফোন নাম্বারে চেষ্টা করলেও বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের কাউকে পাওয়া যায় না। অধিকাংশ কর্মকর্তারা মোবাইল নাম্বার রাখেন বন্ধ।

শনিবার (২২ এপ্রিল) এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সকাল-বিকাল পরীক্ষা ছিলো। কিন্তÍু দুটি পরীক্ষাই বিদ্যুৎবিহীন ছিলো। এমনিতে উপজেলায় সকালে বাতাশ ছাড়া বৃষ্টিপাত হয়েছিলো। পরীক্ষা কেন্দ্রের ক্ষগুলোতে ছিলো অন্ধকার। ফলে প্রতিটি কক্ষে মোমবাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষা দিতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। বিদ্যুিবহীন অবস্থায় চরম ভোগান্তিতে পরীক্ষার্থীরা। এতে পরীক্ষা শেষে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

পরীক্ষার্থীরা এবং তাদের অভিভাবকরা জানায়, ‘উপজেলা বিদ্যুৎ যায় না মাঝে মধ্যে আসে। আবার তার মেলে দেখা যদিও আর গর্জন শোনা না যায়। একবার বিদ্যুৎ গেলে কখন আসবে তা বলাও মুশকিল তা দিনে হক আর রাতেই। ফলে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমার কর্তৃপক্ষরা কাজ করতে খাচ্ছে হিমশিম।

দিনের বেলায়ও মমবাতি জ্বালিয়ে কাজ করছে তারা। এমনকি বাদ যাচ্ছেনা চলতি এইচএসসি পরীক্ষার্থীও।

ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ীদের পড়েছে মাতায় হাত বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে তারা পড়ছে বিপাকে।

জানা গেছে, বিদ্যুতের এই ভেল্কিবাজির ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকছে মতলব ইত্তরের জনসাধারণ। শুধু তাই নয় একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে দিন-রাত চলে যায় তবু বিদ্যুতের দেখা মিলে না।

ব্যাহত হচ্ছে সরকারি, বেসরকারি, ব্যাংক, বিমার কাজ, স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা। আবার গরমে সময়ে তীব্র গরমে ঘণ্টায় ঘণ্টায় প্রায় লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে মতলব উত্তরে জনগণ।

দিনে প্রায় অর্ধেকের বেশি সময় এবং রাতে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং ও ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মধ্যে রয়েছে চাপা ক্ষোভ।

অপর দিকে, ইলেকট্রন্সি ও ইলেকট্রিক ব্যবসায়ীরা পড়ছে বিপাকে অফিসিয়ালি ও অন্যান্য কাজে দুর্দান্ত থেকে আশা মানুষজন ঠিকমতো ফোটোকপি কম্পিউটার কম্পোজ বিদ্যুতিক নির্ভরশীল কাজ কর্ম করতে পরছে না।

উপজেলায় ফোটোকপি, কম্পিউটার ব্যবসায়ী সুমন শিকদার চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, ‘বিদ্যুতের লোডশেডিং বেশি হওয়ায় দিন দিন ব্যবসা অচল হচ্ছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি এক কর্মকর্তা চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে আমাদেরও কাজ করতে অনেক অসুবিধা হচ্ছে।’

ছেংগারচর ডিগ্রি কলেজের অদ্যক্ষ এসএম আবুল বাশার চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘শনিবার (২২ এপ্রিল) ছিলো এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সকালে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের রহিসাব বিজ্ঞান আর বিকেলে মানবিক বিভাগের সমাজ কর্ম ও কল্যান বিষয়ে পরীক্ষা। এ দুটি’ পরীক্ষার পুরো সময়েই বিদ্যুৎ ছিলো না। বৃষ্টিপাতের কারণে কক্ষ গুলোতে অন্ধকার হয়ে পড়েছিলো। পরীক্ষার্থীরা কিছু দেখতে পারছিলো না। কোনো উপায় না পেয়ে প্রতি রুমে মোমবাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করেছি। কয়েকবার বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের ফোন করে তাদের পাওয়া যায়নি। সামান্য বৃষ্টিপাত আর সামান্য গর্জনের শব্দে যদি সারা দিন, সারা রাত বিদ্যুৎ না থাকে তাহলে পরীক্ষার্থীদের উপায় কি হবে?।’

তিনি পরীক্ষা চলাকালিন সময়ে বড় কোনো কারণ ছাড়া বিদ্যুৎ বন্ধ না রাখার জন্য পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তা না হলে পরীক্ষার্থীদের উপর এর বিরুপ প্রভাব পড়বে।

তিনি আরো বলেন,আকাশে বৃষ্টির ভাব দেখলেই যদি কোনো কারণ ছাড়া বিদ্যুৎ চলে যায় তা যদি এরকম ধারাবাহিকতা থাকে তাহলে পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের পক্ষ থেকে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।

চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিমতলব উত্তর জোনাল অফিসের ডিজিএম মোঃ আবুল কালাম চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,‘ মতলব উত্তরে উপজেলায় ৫০ হাজার গ্রাহকদের জন্য চাহিদা প্রায় ১২ মেগাওয়াট আর পাওয়া যাচ্ছে ৮ মেগাওয়াট। যার ফলে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে তাও গরম বেশি পড়লে।’

পরীক্ষা চলকালিন সময়ে বিদ্যুৎ না কেন জানতে চাইলে তিনি চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘লাইন ফল্ট করেছে। মতলব দক্ষিণ উপজেলা এবং চাঁদপুরের কচুয়ার সাথে আমাদের লাইন। কঁচুয়া এবং মতলব দক্ষিণে বিদ্যুতের সমস্যা হলে আমাদের এখানেও বিদ্যুৎ থাকে না। আবার আমাদের এখানে সমস্যা হলেও বিদ্যুৎ থাকে না। যারফলে এ উপজেলায় এ সমস্যাটা পড়তে হচ্ছে। এ লাইনটা যদি কচুয়া এবং মতলব থেকে আলাদা করা যায় আর আমাদের চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ পাই তাহলে লোডশেডিং এবং এ সমস্য থাকবে না।’

প্রতিবেদক- খান মোহাম্মদ কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১২: ১৩ এএম, ২৩ এপ্রিল ২০১৭, রোববার
ডিএইচ

Leave a Reply