Home / জাতীয় / রাজনীতি / আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে রাজধানীতে ব্যাপক আয়োজন
Awami_League_2

আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে রাজধানীতে ব্যাপক আয়োজন

আওয়ামী লীগের আসন্ন জাতীয় সম্মেলন আয়োজনের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ রাজধানীতে থাকছে ব্যাপক আয়োজন

দলটির নেতারা বলছেন, মঞ্চের অবয়ব, সাজসজ্জা, আপ্যায়ন ও অংশগ্রহণের দিক থেকে এবারের আয়োজন আগের সব সম্মেলনকে ছাড়িয়ে যাবে।

গণভবনে গত শনিবার রাতে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকে সম্মেলনের জন্য দলীয় তহবিল থেকে ২ কোটি ৬৫ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে।

তবে যেভাবে আয়োজন চলছে, তাতে ব্যয় এ বাজেট ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন দলের অনেকে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২২ ও ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

এতে কেন্দ্রীয় নেতা, কাউন্সিলর, প্রতিনিধি, দেশি-বিদেশি অতিথি ও শুভানুধ্যায়ী মিলে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষের আগমন আশা করা হচ্ছে। তাই ৫০ হাজার মানুষের জন্য দুই দিন তিন বেলা খাওয়ার আয়োজন করা হচ্ছে।

২৬ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের জন্য মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে গিয়ে দেখা গেছে, মঞ্চ প্রস্তুতের কাজ প্রায় চূড়ান্ত।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের ছয়টি পথ ঠিক করা হয়েছে। একটি দিয়ে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবেশ করবেন। আরেকটি ভিআইপি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রবেশের জন্য।

বাকি চারটি প্রবেশপথ দিয়ে যাতায়াত করবেন কাউন্সিলর, প্রতিনিধি ও আগত নেতা-কর্মীরা। প্রতিটি পথ থেকে সম্মেলনের মঞ্চ ও প্যান্ডেল পর্যন্ত চলার পথের দুই ধারে আলোকসজ্জা দেখা যায়। উদ্যানের গাছে গাছে লাগানো হয়েছে নানা রঙের ও আকারের বাতি।

উদ্যানের চারপাশে আরও বেশ কিছু তোরণ নির্মাণ করা হবে। কমলাপুর স্টেশন, গাবতলী, আবদুল্লাহপুর, কাঁচপুর, কেরানীগঞ্জসহ ঢাকার প্রতিটি প্রবেশমুখে তোরণ নির্মাণ করা হচ্ছে। রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে আলোকসজ্জার কাজ চলছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়ক বিভাজকে লাগানো হচ্ছে বাতি। বিজয় সরণি হয়ে এই আলোকসজ্জা গাবতলী পর্যন্ত যাবে।

তদারকিতে যুক্ত একাধিক নেতা বলেন, পুরো নগরে সম্মেলনের আলোর রোশনাই ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।

কেন্দ্রীয় আয়োজনের বাইরে ঢাকায় দলীয় সাংসদ ও স্থানীয় নেতারা নিজ নিজ এলাকায় আলোকসজ্জা ও তোরণ নির্মাণ করবেন।

ঢাকার বাইরে জেলা ও উপজেলাগুলোতে আলোকসজ্জা ও তোরণ নির্মাণ করা হবে স্থানীয় নেতাদের উদ্যোগে। তবে সব আয়োজনের নকশা কেন্দ্রীয়ভাবে ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।

দলের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, সম্মেলনের সাজসজ্জার দায়িত্বে থাকা দলীয় নেতারা ৮ অক্টোবর গণভবনে দেখা করতে গেলে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা সাজসজ্জার বিপুল আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এ জন্য যে ব্যয় হবে, সেটা কোথা থেকে আসবে, তা-ও জানতে চেয়েছেন। তিনি সব ব্যয় দলীয় তহবিল থেকে মেটাতে বলেছেন।

জানতে চাইলে সাজসজ্জা উপকমিটির সদস্যসচিব ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, দলীয় খরচেই সব আয়োজন করা হচ্ছে।

দলের নেতা-কর্মী ও চারুকলার সাবেক ছাত্ররা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন।

তিনি দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী খরচ নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। তবে আশুরার আগে যেন আলোকসজ্জা না করা হয়, সেই নির্দেশনা দিয়েছেন।

মঞ্চ ও সাজসজ্জা: মঞ্চ করা হচ্ছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার আদলে। লম্বায় তা ১৫০ ফুট। চওড়ায় ৮৪ ফুট।

মঞ্চের ছাদের উচ্চতা ৪২ ফুট। নির্মাণকাজে যুক্ত কর্মীরা জানান, মূল মঞ্চ হবে পাঁচ স্তরের। একেবারে সামনের অংশটির উচ্চতা হবে আড়াই ফুট। যেখানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা হবে। সাত ফুট উচ্চতার স্থানটিতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতারা বসবেন।

আর পেছনের বিভিন্ন উচ্চতার তিন সারিতে কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৫৮ জনের বসার স্থান হবে। মঞ্চের সামনে বিশাল প্যান্ডেল প্রস্তুত করা হয়ে গেছে।

এর ভেতরে ২০ হাজার চেয়ার পাতার জায়গা করা হয়েছে। রয়েছে ১৬টি এলইডি টেলিভিশন বসানোর ব্যবস্থা।

চারুকলার সাবেক ছাত্র ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা কে এম আবুল হাসনাতকে গতকাল মঞ্চ প্রস্তুতের কাজে নির্দেশনা দিতে দেখা যায়।

তিনি বলেন, ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে শতাধিক কারিগর মঞ্চ তৈরির কাজ করছেন। চারুকলার সাবেক ১০-১২ জন ছাত্র রয়েছেন নির্দেশনায়। ২১ অক্টোবরের মধ্যে মঞ্চ প্রস্তুত করে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

আপ্যায়ন: আপ্যায়ন উপকমিটির সদস্যসচিব ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, প্রথমে তাঁরা ৩৫-৪০ হাজার মানুষের আপ্যায়নের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন।

কিন্তু দলীয় সভানেত্রী আরও বাড়াতে নির্দেশনা দিয়েছেন। এখন তা ৫০ হাজারে পৌঁছাতে পারে।

নেতারা জানান, প্রথম দিন দুপুরে মোরগ-পোলাও দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে আগত নেতা-কর্মীদের। ওই দিন রাতে থাকছে ভাতের সঙ্গে খাসির রেজালা।

আর পরদিন দুপুরের খাবারের তালিকায় রাখা হয়েছে পোলাও ও মুরগির মাংস। প্রতি বেলা আহারের সঙ্গে থাকবে বোতলজাত পানি, কোমল পানীয়, ফিরনি, পান, টিস্যু পেপার ইত্যাদি। এর বাইরে চা ও কফির কর্নার থাকছে।

জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে দলীয় নেতাদের নিয়ে ১১টি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে খাদ্য, মঞ্চ ও সাজসজ্জা, প্রচার, সাংস্কৃতিক ও অভ্যর্থনা—এ পাঁচটি উপকমিটি সর্বোচ্চ ব্যয়ের চাহিদা দিয়েছে বলে দায়িত্বশীল একাধিক নেতা জানান।

আগামীকাল মঙ্গলবার সব উপকমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবদের নিয়ে চূড়ান্ত বৈঠক করবেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। পরদিন দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। (প্রথম আলো)

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০১:০০ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০১৬, সোমবার
ডিএইচ

Leave a Reply