Home / বিশেষ সংবাদ / ক্রিকেটার সানির স্ত্রী দাবিদার নাসরিনের সুসাইড নোটে যা লিখা ছিলো
ক্রিকেটার সানির স্ত্রী দাবিদার নাসরিনের সুসাইড নোটে যা লিখা ছিলো

ক্রিকেটার সানির স্ত্রী দাবিদার নাসরিনের সুসাইড নোটে যা লিখা ছিলো

ক্রিকেটার আরাফাত সানির স্ত্রী দাবীদার আত্মহত্যা চেষ্টাকারী নাসরিন সুলতানা তার সুইসাইডাল নোটে মৃত্যুর কারণ ও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে বাবা মাকে যা লিখেছিলেন তা হুবহু তুলে ধরা হলো।

‘আব্বা-মা, আল্লাহ্র রহমতে দুই হাত জোর করে তোমাদের অনুরোধ করতেছি, দয়া করে আমাকে হসপিটালে নিও না। আল্লাহর দোহাই লাগে আমাকে আমার মতো মরতে দাও। আমার জন্য অনেক জ্বালা নিসো, আর নিও না।’
‘মরার পর মাটি দিও কিন্তু হসপিটালে নিও না প্লিস। এতো অপমান সহ্য না করে মরে যাওয়া অনেক ভালো। প্লিজ আমাকে মরতে দাও।’

‘বিথী, কফিনের লকের পাসওয়ার্ড ***। কফিনে ড্রয়ারে ও ড্রয়ারের পার্সে (পাশে) সব ফাইল ও কাগজপত্র আছে make sure that sunny’র উচিৎ শাস্তি ও বিচার হয়।’
‘It is not Suicide, it’s a murder। আমার আজকের এই অবস্থার জন্য শুধু সানী দায়ী। আল্লাহ যাতে ওর বিচার করে। আমার মৃত্যুর জন্য সানী দায়ী।’
‘নাসরিন’

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) রাত সাড়ে ৩টায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। বর্তমানে রাজধানীর রেনেসা হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে নাসরিন।

নাসরিন সুলতানার ছোট বোন জানান, শুক্রবার বেলা ১১টায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টায় আপুর (নাসরিন) মোবাইলে সানির ফোন আসে। এ সময় তিনি বাইরে গিয়ে কথা বলেন। কথা বলার সময় আপু চেচামেচি ও কান্নাকাটি করেন। পরে তিনি ৫০টি ঘুমের ওষুধ খায়। পরিবারের লোকজন ঘুমের ওষুধ খাওয়ার বিষয়টি সকালে টের পেয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

এর আগে প্রথমে চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি তথ্যপ্রযুক্তি আইনে নাসরিনের করা মামলায় বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সেদিন পুলিশের মোহাম্মদপুর বিভাগের দায়িত্বশীল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আপত্তিকর ছবি দেওয়ার অভিযোগে ওই নারী আরাফাতের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর জানান, ৫ জানুয়ারি মামলাটি করেন ওই নারী।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিয়ের পর সানি তার কাছে যৌতুক হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করেছেন। এরপর আরাফাত সানির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

তিনি অভিযোগ করেন, ফেসবুক মেসেঞ্জারে তাদের কিছু অন্তরঙ্গ ছবি পাঠিয়ে তাকে হুমকি দেন এই ক্রিকেটার। মি. সানি ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছেন এবং অশ্লীল ছবি প্রচার করেছেন বলেও তিনি জানিয়েছিলেন।

ওই ঘটনায় এবছরের জানুয়ারি মাসে আরাফাত সানিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং তাকে একদিনের রিম্যান্ডেও পাঠায় আদালত।
ঘটনার তদন্ত শেষে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশআদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় এপ্রিলে।

তবে গ্রেপ্তার হওয়ার পর গত মাসের শুরুর দিকে মামলা দায়েরকারী তরুণীর সঙ্গে আপোষের পর জামিন পান ক্রিকেটার আরাফাত সানি।
গত জুলাইতে সানি তার বিরুদ্ধে দায়ের করা যৌতুকের মামলায় জামিন পান।
এরপর গত ১৯ আগষ্ট নারী নির্যাতনের মামলা ভুল তথ্য দিয়ে দায়ের করা হয়েছে বলে আদালতে দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করে পুলিশ।
ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান ঐদিন গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানান।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় চূড়ান্ত এই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সানির আইনজীবী এম জুয়েল আহমেদ বলেন, সানি ও তার মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াহহিয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) হরলাল মল্লিক বলেন, চূড়ান্ত প্রতিবেদন আসায় মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। সেখানেই মামলার বাকি কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।

চূড়ান্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মামলার বাদী ভুল তথ্য দিয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। তাই আসামিদের অব্যাহতির আবেদন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।

এ ছাড়া তদন্তে আরাফাত সানির সঙ্গে মামলার বাদীর যে বিবাহ ও কাবিন হয়েছে তার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। সানি ও নাসরিনের রেস্তোরাঁয় বিয়ে হয়েছে বলেও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সানির মা নার্গিস সুলতানা লোকজনকে নিয়ে মামলার বাদীকে মারধর করেছেন বলে যে অভিযোগ আছে, তারও কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এর আগে সানি তথ্যপ্রযুক্তি মামলায় প্রায় এক মাস কারাগারে আটক ছিলেন।

তদন্ত প্রতিবেদন ৩১ আগস্ট
এর আগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় ক্রিকেটার আরাফাত সানির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে আগামী ৩১ আগস্ট দিন ধার্য করে আদালত।

ঢাকার মহানগর হাকিম জিয়ারুল ইসলাম প্রতিবেদন দাখিলের এই দিন ধার্য করেন।

আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) হরলাল মলি্লক সাংবাদিকদের জানান, ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না করায় সময়ের আবেদন করে। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন করে দিন ধার্য করেন।

গত ২২ জানুয়ারি সকালে ঢাকার আমিনবাজার এলাকা থেকে সানিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

এ মামলায় একদিনের রিমান্ড ভোগ করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের দুটি মামলা করা হয়। সেসব মামলা থেকেও জামিন পান সানি।

অন্যদিকে এর আগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানির শেষবারের মতো জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করে আদালত।

সানির আইনজীবী এম জুয়েল আহম্মেদ জানান, ‘সানির জামিনের মেয়াদ শেষ হলে আদালতে নতুন করে জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করি। আদালত শুনানি শেষে শেষবারের মতো জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করে এবং বাদীর সঙ্গে আপস করার নির্দেশ দেয়।’

এর আগে সানির স্ত্রী নাসরিনের করা আরেকটি যৌতুকের মামলায় ঢাকার মহানগর হাকিম জাকির হোসেন টিপু ক্রিকেটার সানির জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর সানি আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক পুনরায় সানির জামিন মঞ্জুর করেন।’

গত ২২ জানুয়ারি সকালে ঢাকার আমিনবাজার এলাকা থেকে সানিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

এ মামলায় একদিনের রিমান্ড ভোগ করেন তিনি। এর পর নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা এবং তথ্যপ্রযুক্তি মামলায় জামিন পান সানি।

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ২ : ০০ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০১৭, শনিবার
ডিএইচ

Leave a Reply